বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের ফলে উপকূলীয় জনমনে আতংক বাড়ছে। রবিবার (২৩ অক্টোবর) মোংলাসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শক্তি বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপটি সোমবার (২৪ অক্টোবর) ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হবে। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘সিত্রাং’।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টেবার) ভোরের দিকে এটি বাংলাদেশ অতিক্রম করবে।
মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ অমরেশ চন্দ্র ঢালী বলেন, ‘সাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি আরও শক্তিশালী হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রুপ নিবে। এটি আরও শক্তিশালী হলে ২৪ ও ২৫ অক্টোবর ভারী বৃষ্টিপাত হবে। মোংলা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখানো হয়েছে। বাতাসের গতিবেগ ৫০ থেকে ৬০ এ আছে। যদি প্রতিঘন্টায় ৭৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার হয় তাহলে এটি সাইক্লোনে রুপ নিবে। পরিস্থিতি দেখে তখন সংকেত বাড়ানো হবে’।
এদিকে এর ফলে সাগর উত্তাল থাকার পাশাপাশি সকাল থেকে টানা বৃষ্টি ঝড়ায় নতুন করে উপকূলের জনমনে আতংক বিরাজ করছে। সুন্দরবনের পাশের এলাকা জয়মনির বাসিন্দা মোঃ শাহজালাল (৪৮) বলেন, সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে, মনে হয় ঝড় হবে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার জন্য প্রস্তত থাকতে বলা হয়েছে, এজন্য তারা আতংকে আছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘ঝড়ের পূর্বভাসের কারণে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের পাশাপাশি, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ও সিপিপি (ঘূর্ণিঝড় প্রস্ততি কর্মসূচি) কে প্রস্তত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া ১০৩টি সাইক্লোন শেল্টারও প্রস্তত রাখতে বলা হয়েছে’।
সিপিপি’র মোংলা উপজেলার টিম লিডার মাহমুদ হাসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা ও করনীয় দায়িত্ব পালনে তাদের ১৩২০ জন স্বেচ্ছাসেবক কর্মিরা প্রস্তত রয়েছেন। ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় এসব কর্মিরা ঝড়ের সংকেত বাড়ার সাথে সাথে মানুষজনকে এলার্টসহ নিরাপদে আশ্রয়ে নিতে তাদের দায়িত্ব বাড়িয়ে দিবে। এদিকে উপকূলে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়ের সাথে একই দিনে সূর্যগ্রহনের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ ফুট পানি বাড়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ ও আমাবস্যার প্রভাব কারণে তিন থেকে পাঁচ ফুট পানি বৃদ্ধি পাবে। এজন্য উপকূলের জনপদকে সতর্ক হতে বলা হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাষ্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ শাহীন মজিদ জানান, এখন যেহেতু সংকেত ৩ আছে। সেহেতু কোন সমস্যা নাই। বন্দরে অবস্থানরত ১৩টি বাণিজ্যিক জাহাজের কাজ স্বভাবিক নিয়মে চলছে। ঝড়ের গতিবেগ বাড়লে বন্দরের নিজস্ব এলার্ট জারির পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
+ There are no comments
Add yours