বিপদ সংকেতেও নদীতে চলছে যাত্রীবাহী ট্রলার, ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছে যাত্রী!

Estimated read time 1 min read
Ad1

সাত নম্বর বিপদ সংকেতের প্রভাবে সাগর ও নদীতে উত্তাল ঢেউ চলছে। মুহুর্তে মুহুর্তে বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ছে নদীর দু’পাড়ে। প্রচন্ড বাতাসসহ একটানা বৃষ্টি যেন থামছেইনা। আতংকে মানুষজন ঘরবন্দী! শহর ও গ্রামজুড়ে চলছে সতর্কতামূলক মাইকিং। এরমধ্যে নদীতে চলছে যাত্রীবাহী ট্রলার। কিন্তু কেন? এসব প্রশ্নে ট্রলারের মাঝিরা বলছেন, পেটের জ্বালা বড় ক্ষুধা। এর চেয়ে পৃথিবীতে অশান্তি কিছু নাই।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুর ১ টা। মোংলার মামার ঘাট থেকে ছেড়ে যাচ্ছে একটার পর একটা ট্রলার। যাত্রীও হচ্ছে তাতে। আবার মাছ বোঝাই করেও পার হচ্ছে ট্রলার। ট্রলার মাঝি সাখাওয়াত আকন (৪৫) বলেন, সকাল থেক অন্তত ২০ টি ট্রিপ দিয়েছেন। তাতে বেশিরভাগ ইপিজেডের নারী যাত্রী ছিলেন। ঝুঁকি নিয়ে কেন ট্রলার নিয়ে নদীতে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘরে বাজার নেই চাল নেই। যা ইনকাম হবে তা দিয়ে দুপুরে বাজার করে ছেলেমেয়ে নিয়ে খেতে হবে। উপায় নাই!

ইব্রাহিম হোসেন (৩৮) নামে আরেক মাঝি বলেন, ‘পেটে ক্ষুধা থাকলে আপনিও নদীতে থাকতেন, পেটের জ্বালার মত পৃথিবীতে কোন অশান্তি নাই’!

মোংলা মাঝি মাল্লা সংঘের সদস্য খলিলুর রহমান বলেন, ‘১৬০ জন ২০টি ট্রলার নিয়ে সকাল থেকে নদীতে আছেন। তাদের ইনকাম বলতে এই নদী দিয়ে যাত্রী পারাপার। এছাড়া ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিকদের পার না করলে তাদেরওতো সংসার আছে, তাদেরও পেট আছে। ঝড়টর আমাদের কিছু করার নাই’।

দুপুর দেড়টায় ইপিজেড থেকে ফিরছিলেন কয়েক’শ নারী শ্রমিক। তাদের মধ্যে রিনা বেগম (২৭) ও বিলকিস আক্তার (২৪) বলেন, ‘ফ্যাক্টরীতে না গেলে হাজিরা কাটবে। তাই বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ঝড়ের মধ্যে ফ্যাক্টরিতে হাজিরা দিয়েছি, কি করবো বলেন’।

মোংলা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মাহাবুব আহম্মেদ সিদ্দিক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,’ আমাদের কাছে সোমবার দুপুরে বিপদ সংকেত জারির কাগজ আসার পরই সবগুলো ফ্যাক্টরীকে ছুটি দিতে বলেছি। এখন সব ফ্যাক্টরী বন্ধ ‘।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘সাত নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর আমি নিজে মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে যাচ্ছি। এছাড়া সকালে ফেরীসহ সকল নৌযান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছি, যদি কোন ট্রলার চলে আমি এখনই বিষয়টি দেখছি’।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোংলা ৪৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এই আতংকে সোমবার সকাল থেকে পৌর শহরর ৩২টিসহ ১০৩ টি আশ্রয়কেন্দ্রে দূর্গতরা আশ্রয় নিতে ছুটে যাচ্ছেন। তাদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক তিনটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। বন্দরের জাহাজে পণ্য ওঠা নামার কাজও বন্ধ রাখা হয়েছে।

আলী আজীম, মোংলা (বাগেরহাট)
নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours