আজিজুল হক চৌধুরীঃ
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর কৃষকদের কাছে দিনদিন জনপ্রিয় হচ্ছে কেঁচো সার। উপজেলা কৃষি অফিস এ সারটির উপকারিতা কৃষকের কাছে পৌঁছাতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করায় কৃষকরা এ সার তৈরির দিকে ঝুঁকছেন। গত দুই বছরে ধরে কেঁচো সার উৎপাদন করে বেশ লাভ হয়েছেন কড়লডেঙ্গার দেলোয়ার, খরণদ্বীপের মনসুর, সারোয়াতলীর আবছারসহ অনেক কৃষক।
কেঁচো উৎপাদন প্রক্রিয়া ও এই সারটি সবজি চাষে ব্যবহারে সহজ হওয়ার কারণে বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) উৎপাদনে উৎসাহী হচ্ছেন বোয়ালখালীর কৃষকরা। ইতোমধ্যে সাফল্য পাওয়াতে বাণিজ্যিকভাবে এ ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে অর্থ বিনোয়োগ করছেন কৃষকরা এমনটিই জানালেন মাঠ কর্মকর্তা সৌমিত্র দে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এনএফএলসিসি প্রকল্পের আওতায় ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে কেঁচো সার উৎপাদন খামার গড়ে তোলা হয়েছে। পাকা মেঝেতে পাকা রিং স্থাপন করে এ সার উৎপাদনের প্রাথমিক কাজ করা সারা হয়। তাতে প্রাকৃতিক পচনশীল জৈব উপাদান গোবর, মুরগীর বিষ্ঠা, মাটি, খড়, তরকারির খোসা, নাড়িভুঁড়ি এ সার তৈরিতে প্রয়োজন হয়। ১৫ সেন্টিমিটারের বেডে কেঁচো ছেড়ে দিয়ে উপাদানগুলো কেঁচোর খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বেডের উপরিভাগ চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে দিলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। তবে ছায়া প্রদান করলে সবচেয়ে বেশি ভাল ফল পাওয়া যায়।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, বাণিজ্যিকভাবে এ সারের চাহিদা ধীরে ধীরে ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে। উৎপাদন খরচ কম হওয়াতে সাধারণ কৃষকরা সার উৎপাদনে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এছাড়া অন্যান্য সার তৈরির চেয়ে কেঁচো সার তৈরিতে সময় লাগে কম। গবেষণায় দেখা যায়, আদর্শ ভার্মি কম্পোস্টে রয়েছে নাইট্রোজেন ১.৫৭ ভাগ, ফসফরাস ১.২৬ ভাগ, পটাশ ২.৬০ ভাগ, সালফার ০.৭৪ ভাগ, ম্যাগনেশিয়াম ০.৬৬ ভাগ, বোরণ ০.০৬ ভাগ। এছাড়া অন্য কম্পোস্ট থেকে কেঁচো কম্পোস্ট ৭-১০ ভাগ পুষ্টিমানে বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. আতিক উল্লাহ বলেন, ফসলের উৎপাদন বাড়াতে কেঁচো সার (ভার্মি কম্পোস্ট) ব্যবহার করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। এ সার জমির উর্বর মাটি তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে। কেঁচো সারের উপকারিতা তৃণমূল পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। এতে কৃষকরা যেমন উপকৃত হবে, তেমনিভাবে এ সার উৎপাদনে আরও অনেকেই আগ্রহী হবে।
+ There are no comments
Add yours