চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের সামনে দু-চার দিন আগেই চালু হয়েছে শাহজালাল হোটেল। কিন্তু বিগত ৩৪ বছর ধরে এই খাবার হোটেলটির নাম ছিল প্রয়াস। সেই হোটেলের মালিক ছিলেন ওলি আকন।
১৯৮৮ সালে স্বল্প পুঁজি নিয়ে গিয়েছিলেন সেখানে। চলতি মাসে তল্পিতল্পা গুছিয়ে শূন্য হাতে তিনি ফিরেছেন গ্রামের বাড়িতে। এক পয়সাও মুনাফা নিয়ে ফিরতে পারেননি।
হোটেল প্রয়াস টিকিয়ে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাকিতে খাবার দিয়ে পথে বসেছেন ওলি আকন। খাবার বাকিতে না দিলে মারধর ও দোকানে হামলারও ঘটনা ঘটেছে। ৩৪ বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি জানান, কিছু শিক্ষার্থীর মানবিকতা ও নৈতিক শিক্ষা কিছুই নেই। এজন্য আর ফিরতে চান না চট্টগ্রামে।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার কাজীরহাট থানার আন্ধারমানিক গ্রামের আকন বাড়ির বাসিন্দা ওলি আকন এসব কথান জানান।
তিনি জানান, ১৯৮৮ থেকে ২০২২ সালের পরিক্রমা চোখের সামনেই জ্বলজ্বল করছে তার। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাজে কিছু অভিজ্ঞতার কারণে এখনো সেসব কথা স্পষ্ট করে বলতে ভয় পান।
বকেয়া টাকার কথা জানাজানির পর সমালোচনার সৃষ্টি হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে তার ওপরে। তবে তার কোনো অভিযোগ নেই কারও বিরুদ্ধে। কথায় কথায় স্বপ্নের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার গল্প বলছিলেন ওলি আকন।
তিনি বলেন, আমার খালাতো ভাই ছিলেন ওখানকার ছাত্র। তারা প্রথমে হোটেলটি চালু করেছিলেন। কিন্তু বিভিন্ন কারনে সেটি চালাতে পারছিলেন না। সেটি আমি ১৯৮৮ সালে দায়িত্ব নিই। প্রথম কয়েক বছর ভালোই চলছিল।
কিন্তু বিগত ১৫ বছর ধরে পুঁজি খাটিয়েও কোনো লাভ হচ্ছিল না। অনেক সময়ে জার্মান প্রাবাসী ছেলের কাছ থেকে টাকা এনে হোটেলের কর্মচারীদের বেতন দিতাম। আমি চাইতাম ব্যবসাটি টিকে থাকুক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, ওলি আকন কার কাছে কত টাকা পাবেন তা আমাদের কিছুই জানাননি। তার অভিযোগের বিষয়টি আমি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জেনেছি।
আজই (বুধবার) ব্যবসায়ী সমিতির কাছ থেকে খবর নিই। ব্যবসায়ী সমিতিও তার পাওনা সর্ম্পকে কিছুই জানে না। বরং ওলি আকনের কাছে অনেকে টাকা পায় বলেছে। এখন কে কার কাছে কী পাবে, সেটি বলা মুশকিল।
+ There are no comments
Add yours