লেনদেন সুবিধার সাথে কেনাকাটা, শ্রমিকের বেতন-ভাতা, বিভিন্ন বিল পরিশোধ, ঋণ প্রদানসহ যোগ হয়েছে নতুন নতুন সেবা। ফলে বিকাশ, রকেট, নগদের মতো মোবাইলে আর্থিক সেবার উপর মানুষের আগ্রহের পাশাপাশি নির্ভরশীলতা বাড়ছে।
গ্রাহকের সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণও। মোবাইল ব্যাংকিং এখন গ্রাহক সংখ্যা ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। দিনে লেনদেন হচ্ছে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। গত অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রাহকরা ৯৩ হাজার কোটি টাকার লেনদেন করেছেন।
প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা। তবে ডাক বিভাগের সেবা নগদের তথ্য এখানে হিসাব হয়নি। নগদের তথ্য যোগ করলে মোট লেনদেন আরও ২৩ হাজার কোটি টাকার মতো বেড়ে যাবে। সেই হিসাবে এমএফএস এ লেনদেন দাঁড়াবে ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৩টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে জড়িত। ২০২২ সালের অক্টোবর মাস শেষে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ২৩ হাজারে।
এর মধ্যে গ্রামে ১০ কোটি ৪০ লাখ এবং শহরে ৮ কোটি ৩৫ লাখ গ্রাহক। এছাড়া নিবন্ধিতদের মধ্যে পুরুষ ১০ কোটি ৮৬ লাখ এবং নারী গ্রাহক ৭ কোটি ৮৪ লাখ রয়েছে। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ২১ হাজার ৮০৩ জনে।
এমএফএসে গত অক্টোবরে মোট ৪৪ কোটি ৪০ লাখ ৬২ হাজার ৩৬০টি লেনদেনের মাধ্যমে ৬৭ হাজার ৯৬৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা আদার-প্রদান হয়। আলোচিত মাসজুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ২৭ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। এ সময়ে উত্তোলন করেছে ২৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে এমএফএসে ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে ২৫ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২২৮৩ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৩৩৬০ কোটি টাকা।
২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।
+ There are no comments
Add yours