আবারও বাড়ছে করোনা, চার বিষয়ে কারিগরি কমিটির সতর্কতা

Estimated read time 1 min read
Ad1

করোনা মহামারি শেষ হয়েও হচ্ছে না। ফের বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ। আবারও সেই চীনে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা, ব্রাজিলের মতো দেশগুলোতেও। এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

এবার ছড়িয়ে পড়ছে ওমিক্রনের নতুন ধরন ‘বিএফ.৭’, যা অতি সংক্রামক ও শনাক্ত করা কঠিন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চীনে নতুন করে ২৫ কোটিরও বেশি মানুষ করোনা সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে ভারতসহ বাংলাদেশেও সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ মোকাবিলায় সরকারের কোভিডবিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটি ৪ দফা সুপারিশ জানিয়েছে।

আজ (২৫ ডিসেম্বর) সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত বিশ্বে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিতে বাংলাদেশের করণীয় শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সভায় এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির।

তিনি জানান, চীন-ভারতসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে আবারও করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাড়ছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু আছে। অসংখ্য মানুষ প্রতিনিয়ত আসা যাওয়া করছে। এই অবস্থায় করণীয় ঠিক করতে শনিবার জাতীয় কারিগরি কমিটির বৈঠক ছিল। কমিটি চারটি বিষয়ে আমাদের পরামর্শ দিয়েছে।

আহমেদুল কবির বলেন, করোনা সংক্রমণের নতুন ভ্যারিয়েন্টে সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের জন্য এটির ভয়াবহতা অনেক বেশি। তাই যারা টিকা নেয়নি তাদের দ্রুত নিয়ে নেওয়ার জন্য কারিগরি কমিটি সুপারিশ করেছে।

সেকেন্ড বুস্টার ডোজের (চতুর্থ ডোজ) প্রচার প্রচারণা বৃদ্ধির বিষয়েও বলেছে কমিটি। যারা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, প্রেগন্যান্ট নারী ও ষাটোর্ধ যারা আছেন, তাদেরকে দ্বিতীয় বুস্টার ডোজ দ্রুততম সময়ে নিয়ে নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

দ্বিতীয় সুপারিশ হলো যাদের কোমরবিড কন্ডিশন রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই প্রটেকটিভ কেয়ার যেমন- মাস্ক ব্যবহার করা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকার বিষয়ে কারিগরি কমিটি থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, কারিগরি কমিটির সভায় তৃতীয়ত যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তা হলো বিমানবন্দর, স্থলবন্দরসহ সব পোর্টগুলোতে পরীক্ষা জোরদার করা।

রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ইতোমধ্যেই বিভিন্ন পোর্টগুলোতে চিঠি দিয়েছেন, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করে তাদের আইসোলেট করা বা তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া।

এছাড়াও যেসব দেশে করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছে, সেসব সন্দেহভাজন দেশ থেকে যারা আসবেন, তাদের মধ্যে উপসর্গ থাকলে দ্রুত পরীক্ষার আওতায় এনে যেকোনো ভাবে এটিকে রিস্ট্রিক্ট করা, যাতে নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাবটি আমাদের দেশে না ঢুকতে পারে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা আইইডিসিআরকে নির্দেশনা দিয়েছি, যদিও দেশে বর্তমানে আক্রান্ত সংখ্যা বেশি হচ্ছে না, তারপরও আমরা বলেছি যাদেরই সংক্রমণ পজিটিভ আসবে, তাদের যেন জেনেটিক সিকোয়েন্স করে সংক্রমণের নতুন ভ্যারিয়েন্ট আছে কিনা সেটি যেন পরীক্ষা করা হয়।

আহমেদুল কবির আরও বলেন, কারিগরি কমিটির সভায় বলা হয়েছে, দ্বিতীয় বুস্টার ডোজে ফাইজারের যে টিকা দেওয়া হচ্ছে, সেটির মেয়াদ ফাইজার কোম্পানিই এক্সটেনশন করেছে। এ বিষয়ে ডিজিডিএ অ্যাপ্রোভাল দিয়েছে, জাতীয় কারিগরি কমিটিও বলেছে সেই ভ্যাকসিনটি দ্রুত দিয়ে দেওয়ার জন্য। একই সঙ্গে এটি নিয়ে যেনকোনো কনফিউশান তৈরি না হয়, সে বিষয়েও কারিগরি কমিটি নির্দেশনা দিয়েছে।

ওমিক্রন বিএফ.৭-এর উপসর্গগুলো কী কী

শীতকাল মানেই সর্দি-কাশি, জ্বরের মৌসুম। কমবেশি সবাই এ সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠান্ডা লেগেছে মানেই যেমন করোনা নয়, তেমনি ঠান্ডা লাগলেও তা এড়িয়ে যাওয়াও এ পরিস্থিতিতে বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। সুরক্ষিত থাকতে তাই সবচেয়ে আগে জেনে নেয়া জরুরি ওমিক্রন বিএফ.৭-এর উপসর্গগুলো।

করোনার বাকি উপসর্গের সঙ্গে নতুন ধরনটির তেমন কোনো বৈসাদৃশ্য তথা অমিল নেই। আক্রান্ত ব্যক্তির শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি করে। এছাড়া উপসর্গ হিসেবে জ্বর, গলাব্যথা, সর্দি ও কাশি দেখা দেয়। এছাড়া মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথার মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে।

এ ভাইরাসে সংক্রমিত কোনো ব্যক্তি একই সঙ্গে ১০-১৮ জনের মধ্যে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারেন। সবচেয়ে উদ্বেগের ব্যাপার হলো, সবসময় যে উপসর্গ দেখা দেবেই তেমনটা নয়। নীরবে এসে বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। ফলে অত্যন্ত সাবধানে থাকা জরুরি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, মাস্ক পরার অভ্যাস নতুন করে শুরু করা উচিত। রাস্তাঘাটে চলাচলের সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মহামারির সময় ঠিক যে যে সুরক্ষা নেয়া হতো, আবারও তা নেয়া শুরু করতে হবে। টিকা নেয়া না থাকলে অবশ্যই তা নিয়ে নিতে হবে। বাড়ির বয়স্ক ও ছোট সদস্যদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours