শ্রম আদালতে পরিচালিত মামলাসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তি, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় করণীয় সম্পর্কে পর্যালোচনার জন্য বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও সেইফটি অ্যান্ড রাইটস্ সোসাইটি (এসআরএস) একটি সভার আয়োজন করে।
সভায় শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান ও ঢাকার দুটি শ্রম আদালতের চেয়ারম্যানসহ শ্রম আদালতের সদস্য, আইনজীবী ও এনজিও প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সভায় বলা হয়, বর্তমানে দেশে ১৩টি শ্রম আদালত ও ১টি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল রয়েছে। দেশের এসব আদালতে বর্তমানে ২৫ হাজার ৮১টি মামলা বিচারাধীন আছে। শ্রম আদালতগুলোকে মামলার চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে যারা নানা বাধা ও হয়রানি উপেক্ষা করে আদালতের দ্বারস্থ হন, তাদের পক্ষেও দীর্ঘসূত্রিতার কারণে মামলা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না এবং তারা আইনি প্রতিকার থেকে বঞ্চিত হন।
সভায় যৌথভাবে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্লাস্টের স্টাফ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিফাত-ই-নুর খানম ও এসআরএসের সহকারী আইন কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসেন। সভায় নিম্নোক্ত সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়।
- শ্রম সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে বাধ্যতামূলকভাবে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতি বাংলাদেশ শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তকরণের ব্যবস্থা করা।
- ই-জুডিশিয়ারি কার্যক্রম শ্রম আদালত অন্তর্ভুক্ত করা।
- তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শ্রম মামলার বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণসহ মামলার পরিচালনার ব্যবস্থা করা।
- শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়ানো।
- বিচারকদের প্রশিক্ষণে শ্রম আইন অন্তর্ভুক্ত করা।
- শ্রমিক আইন সহায়তা সেলের সাথে প্যারালিগ্যাল কার্যক্রমের সমন্বয়ে আইন সহায়তা সহজ করা।
- সরকারি ও বেসরকারি আইন সহায়তা প্রদান সংক্রান্ত শ্রম আদালতের মামলা শনাক্ত করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা। যেন অসহায় বিচারপ্রার্থীরা দ্রুত আইনি প্রতিকার পেতে পারেন।
- শ্রমিকদের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বয় বৃদ্ধি করা।
প্যানেল আলোচনায় অ্যাডভোকেট শারমিন সুলতানা বলেন, আদালতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং আদালতের কর্মঘণ্টার পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাও জরুরি।
ট্যানারি শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন- আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা কমছে। পিআইএফই ও ডিওএল-এর মাধ্যমে এখন আর আগের মতো বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে না।
বার এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট সেলিম আহসান খান বলেন, ভুক্তভোগী শ্রমিক যেন ন্যায়বিচার পায় তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
উন্মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথি, শ্রমিক প্রতিনিধি ও এনজিও প্রতিনিধিরা তাদের সুচিন্তিত মতামত প্রদান করেন।
+ There are no comments
Add yours