রাজধানী ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ইউসুফ হাসান আল হিন্দি (বিদেশি নাগরিক) নামে গালফ এয়ারের এক পাইলটের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
ইউসুফের মৃত্যুর প্রায় দেড় মাস পর জর্ডান থেকে ঢাকায় এসে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করলেন তার বোন তালা এলহেনদি। আজ (সোমবার) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিআরইউ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তালা এলহেনদি বলেন, আমি একজন মার্কিন নাগরিক। কাজ করি ব্রিটিশ সরকারের হয়ে। আমার ভাইয়ের চিকিৎসায় ভুল ও অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার পেতে আমি বাংলাদেশে এসেছি।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ঢাকার মেরিডিয়ান হোটেলে ছিলেন ইউসুফ হাসান আল হিন্দি। গালফ এয়ারের ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ইউসুফ হাসান ভোর সাড়ে ৩টায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি ইমিগ্রেশনের সামনে জ্ঞান হারান।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমার ভাইয়ের প্রথম কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। তখন তিনি পাঁচ মিনিট কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন (সিপিআর) পেয়েছেন। ভোর সাড়ে ৫টায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।
ইউনাইটেড হাসপাতালে ইউসুফকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি দাবি করে তালা এলহেনদি বলেন, ভোর পৌনে ৬টায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়। সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে দ্বিতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এরপর তাকে ১০ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয়। রিটার্ন অব স্পনটেইনাস সার্কুলেশন (আরওএসসি) ও ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রামের (এসিজি) পর রিপোর্টে দেখা গেছে, তার একটি অংশ ফুলে গেছে। সকাল পৌনে ৭টায় তার তৃতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় এবং আরওএসসির সঙ্গে ১৫ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয়। বেলা সোয়া ১১টায় ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রমের মধ্যেই আমার ভাইয়ের চতুর্থ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। তাকে ৪৫ মিনিট সিপিআর দেওয়া হয় এবং টেম্পোরারি পেসমেকার (টিপিএম) বসানো হয়। দুপুর ১২টা ৮ মিনিটে আমার ভাই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
তালা এলহেনদি বলেন, চিকিৎসা প্রক্রিয়ার সময় তাকে ওষুধ প্রয়োগ করে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, আমার ভাইয়ের চিকিৎসা করেছেন ডা. কায়সার নাসির। কিন্তু আমার ভাইয়ের পরিবারের কাছে চিকিৎসার যে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, তাতে তার নাম পাওয়া যায়নি।
তালা এলহেনদি আরও বলেন, ফোনে কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। ভোর ৪টা ৮ মিনিট থেকে ১২টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা সময় পেয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ সময়ের মধ্যে তারা আমার ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে পারতেন, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছেন।
তালা এলহেনদি বলেন, ইমার্জেন্সি রুমের দায়িত্বপ্রাপ্তরা জানতেন যে এক ঘণ্টারও বেশি সময় আগে আমার ভাইয়ের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে এবং তার রক্তচাপ কমে যাওয়ায় সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। কিন্তু তারা কোনো কার্ডিওলজিস্টকে হাজির করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সেখানে কোনো হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ছিলেন না।
শ্বাসনালী সুরক্ষার জন্য আমার ভাইকে টিউব পরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ইমার্জেন্সি রুমের কর্মকর্তারা। কোনো কার্ডিওলজিস্টের পরামর্শ ছাড়াই, ১৫ মিনিটের মধ্যে আমার ভাইকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।
+ There are no comments
Add yours