ঢাবির সেই রনি এখন চা বিক্রেতা

Estimated read time 1 min read
Ad1

বাংলাদেশ রেলওয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলন করে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি।

এছাড়া ঢাবি মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করেও ক্যাম্পাসে পরিচিতি পান তিনি।

তবে এবার আর কোনো প্রতিবাদ নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী শুরু করেছেন নতুন এক কর্মসূচি। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তিনি এখন ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করছেন। রনি বলছেন, এটি আত্মশুদ্ধির আন্দোলন এবং অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ডাস চত্বরে ‘এখানে চা মূল্যে চিন্তা ক্রয়-বিক্রয় করা হয়’ প্ল্যাকার্ড নিয়ে চা বিক্রি করতে দেখা যায় মহিউদ্দিন রনিকে। সেখানেই ঢাকা পোস্টকে শুনিয়েছেন ‘প্রতিবাদী’ থেকে চা বিক্রেতা হয়ে ওঠার গল্প।

রনি বলেন, শুরুটা করেছিলাম মূলত প্রয়োজন থেকে। আপনারা জানেন, আন্দোলনের পর আমি বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং অনেক টাকা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ি। এসময় অনেকে এগিয়ে আসতে চান এবং বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিতে চান। কিন্তু দেখা গেছে, সেগুলো আমার নৈতিকতার সঙ্গে যাচ্ছে না। এগুলো থেকে বাঁচার জন্য আমার কিছু না কিছু করতে হতো। তাই নিজে একটা ব্যবসা শুরু করলাম।

এটিকে আত্মশুদ্ধির আন্দোলন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কোনো সাময়িক ক্যাম্পেইন বা নিছক মজার উদ্দেশ্যে নয়। আত্মশুদ্ধির আন্দোলন, ক্ষুধামন্দা দূরীকরণ ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সৎ উপায়ে উপার্জনের লক্ষ্যে ব্যবসাটা শুরু করেছি। অন্য কারো বিরুদ্ধে আন্দোলন করার আগে, আঙুল তোলার আগে নিজেকে ভালো হতে হবে। আমি চাই না লোভে পড়ে যেতে, আমি চাই না পা পিছলে পড়ে যেতে। তাই আগে নিজে আত্মশুদ্ধির আন্দোলন করছি। আর এই চা বিক্রিটা আমার আত্মশুদ্ধি আন্দোলনের একটি অংশ। পাশাপাশি ক্ষুধা থেকে মুক্তি চাইছি, স্বাবলম্বী হতে চাইছি।

রনি বলেন, আমার বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে শিখিয়েছে জনগণের টাকা মেরে খাওয়ার চাইতে রিকশা চালানো সম্মানের, জুতা সেলাই করা সম্মানের, চা বিক্রি করা সম্মানের। আর আমি সেটাই করছি। আমি এখানে দোষের কিছু দেখছি না। যারা আমার কাছে লোভনীয় ও নেতিবাচক প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল তারা যেন আর না আসে, সেজন্য আমি এই কাজ শুরু করেছি।

তিনি বলেন, যারা আমার এই কাজকে নেগেটিভলি নিচ্ছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলব, আপনারা আরও বেশি নেগেটিভলি নেন। নেগেটিভলি নিতে নিতে যখন অনেক প্রশ্ন জমে যাবে, তখন আমার কাছে চলে আসবেন চা খেতে। তারপর যখন আমার চা খাবেন তখন আপনার মস্তিষ্কের চিন্তার ব্যারিকেড গলে যাবে। যে বিষাক্ততা নিয়ে আপনি বেঁচে থাকেন, সে বিষাক্ততা দূরে চলে যাবে। আমি বিশ্বাস করি, যারা আজ আমাকে গালি দিচ্ছেন তাদের মুখ থেকে এই গালিগুলো ফুল হয়ে ঝরবে।

এর আগে গত এপ্রিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারের আধুনিকায়নসহ ছয় দফা দাবিতে অনশন কর্মসূচি পালন করে আলোচনায় আসেন এই শিক্ষার্থী।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours