এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে মোট পাসের হার ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, পাসের হারে এবার এগিয়ে আছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। আর সর্বোচ্চ জিপিএ ফাইভ নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ঢাকা বোর্ড থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬২ হাজার ৪২১ জন শিক্ষার্থী।
বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এরপর প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন।
ফলাফলে দেখা গেছে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে এবার পাসের হার ৯৪ দশমিক ৪১ শতাংশ। পাসের হারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, এই বোর্ডে পাসের হার ৯২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। পাসের হারে পরের অবস্থানে কুমিল্লা ৯০ দশমিক ৭২ শতাংশ।
ফলাফল প্রকাশকালে প্রফেসর অরুণ চন্দ্র পাল বলেন, গত বছর পাসের হার ছিল ৯৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ৪ হাজার ৭৩১ জন। এবার অতিবন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় আমাদের ফলাফল একটু খারাপ হয়েছে। তবে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে রেকর্ড হয়েছে। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৭১ জন। গতবার থেকে এ বছর ১৪০ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছেন।
এ সময় তিনি আরও জানান, এ বছর সিলেট শিক্ষা বোর্ড থেকে ৬৬ হাজার ৪৯১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৫৪ হাজার ১২২ জন। পাসের হারে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বিজ্ঞান বিভাগ। এই বিভাগের ৯০.৫০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাস করেছেন। এছাড়া ব্যবসায় শিক্ষায় ৮০.২৩ শতাংশ ও মানবিকের ৭৯.১৮ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক দিয়েও এগিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ। বিজ্ঞানের ৩ হাজার ৩৩৩ জন, মানবিকের ১ হাজার ২৬ জন ও ব্যবসায় শিক্ষার ৫১২ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
জেলাভিত্তিক ফলাফলে দেখা যায়, সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে সিলেট জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৮৬.৪৮ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৯ জন। হবিগঞ্জ জেলায় পাসের হার ৮২.২৭ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৩৪ জন। মৌলভীবাজার জেলায় পাসের হার ৭৪.৯১ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৭৭৯ জন। সুনামগঞ্জ জেলায় পাসের হার ৮২.৮৫ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩৮৯ জন।
সিলেটে এবার শতভাগ পাস করেছে ১১টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। তবে একটি প্রতিষ্ঠানেও শতভাগ ফেল নেই।
এদিকে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে গত বছরের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তের সংখ্যা কমেছে। এবার পাসের হার ৮০ দশমিক ৫ শতাংশ। উপস্থিত শিক্ষার্থীর বিবেচনায় এই হার নির্ধারণ করা হয়। গত বছর এই হার ছিল ৮৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ। এছাড়া এ বছর জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১২ হাজার ৬৭০ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৭২০ জন।
শুধুমাত্র এক বিষয়ে ফেল করেছেন ১২ হাজার ৯৩৯ জন। শতকরা হিসেবে এ হার ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ। এবার ১৬টি কলেজের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছে। এবারের পরীক্ষায় ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শিক্ষা বোর্ড জানায়, এবার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৯১ দশমিক ৩০, মানবিক বিভাগ থেকে ৭৩ দশমিক ০৩ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৮৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম মহানগরে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ এবং মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৭৬ দশমিক ১২ শতাংশ। চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা মিলিয়ে পাসের হার ৮২ দশমিক ৭১ শতাংশ।
এবার কক্সবাজার জেলার ৭৪ দশমিক ৯২, রাঙ্গামাটি জেলার ৭৫ দশমিক ৩৩, খাগড়াছড়ি জেলার ৬৮ দশমিক ৭৮ এবং বান্দরবান জেলার ৮১ দশমিক ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
+ There are no comments
Add yours