ইসরায়েলি একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হ্যাকিং, অপকর্ম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশের নির্বাচনে কীভাবে হস্তক্ষেপ করেছে, আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের এক কনসোর্টিয়ামের দীর্ঘ অনুসন্ধানে তা বেরিয়ে এসেছে।
৫০ বছর বয়সী ইসরায়েলি স্পেশাল ফোর্সের সাবেক কর্মকর্তা তাল হানান এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। ‘জর্জ’ ছদ্মনাম ব্যবহার করে তিনি বেসরকারিভাবে এই প্রতিষ্ঠানটির বিশাল একটি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।
দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নির্বাচনে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকদের একটি আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম তাল হানান ও তার প্রতিষ্ঠানের মুখোশ উন্মোচন করেছে। হানান ও তার দল ‘টিম জর্জ’ কোড নাম ব্যবহার করে। সাংবাদিকদের তিনটি দল ভিন্ন ভিন্ন দেশের ক্লায়েন্টের বেশে তাদের কর্মকাণ্ডের মুখোশ উন্মোচন করেছে।
সাংবাদিকদের এই কনসোর্টিয়াম তাল হানান ও তার দল কীভাবে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে সেই বর্ণনাও গোপন ক্যামেরায় ধারণ করেছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের হাতে সাংবাদিকদের এই অনুসন্ধানের বিস্তারিত তথ্য এসেছে।
গোপনে ধারণ করা ভিডিও
গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তাল হানান ও তার দলের সাথে ক্লায়েন্ট বেশে দফায় দফায় বৈঠক করেন সাংবাদিকরা। এসব বৈঠকে হানানের দল কীভাবে মিথ্যা তথ্যের বিস্তার ও নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে সেই বিষয়ে বিরল স্বীকারোক্তি দিয়েছে।
রাজনৈতিকভাবে অস্থির আফ্রিকার একটি দেশের পক্ষে কাজ করার জন্য ওই দেশের সরকারের নিয়োগকৃত পরামর্শক হিসেবে টিম জর্জের কাছে পরিচয় দেন ফরাসি রেডিও স্টেশন রেডিও ফ্রান্স, ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজ এবং দ্য মার্কারের তিন সাংবাদিক। পরামর্শকের ভান করে টিম জর্জের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ওই দেশটিতে নির্বাচন বিলম্বিত করতে তার দলের সহায়তা চেয়েছিলেন তারা।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের দল ‘টিম জর্জ’ কীভাবে মিথ্যা বা ভুল তথ্যকে অস্ত্র বানাচ্ছে সে সম্পর্কে বিস্ময়কর বিবরণ প্রকাশ করেছে। টিম জর্জের প্রতিষ্ঠান নির্বাচনে বেসরকারিভাবে গোপনীয় হস্তক্ষেপ করলেও কোনও ধরনের আলামত রাখে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দল, সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে যে তারা সেবা দেয় সেই বিষয়েও বিশদ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। করপোরেট ক্লায়েন্টদের জন্যও ইসরায়েলি এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে বলে জানিয়েছে।
তাদের বেশিরভাগ কৌশলের লক্ষ্য থাকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা বাধাগ্রস্ত করা বা নাশকতামূলক কোনও কিছু ঘটানো। তাল হানান ও তার দলের দাবি অনুযায়ী, এমনকি তারা অ্যামাজনের মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতিকের বাড়িতে ‘সেক্স টয়ও’ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন; যাতে ওই রাজনীতিকের অন্য নারীর সাথে সম্পর্কে আছে বলে তার স্ত্রীর ধারণা পান।
+ There are no comments
Add yours