দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে জ্ঞান চর্চার কারখানা। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করে শিক্ষার্থীরা নতুন স্বপ্ন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। কিন্তু ভর্তির পর তারা এসে পড়েন আদিম যুগের পশুত্বের বর্বরতার মুখে। র্যাগিং, গেস্ট রুম, ম্যানার শেখানোর নামে তাদের উপর যে অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন করা হয় তা হিংস্র পশুর বর্বরতাকেও হার মানায়।
এ ছাড়াও ম্যানার শেখানো, খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, নির্যাতন, যৌন হয়রানি, দুর্নীতি, প্রশ্নফাঁস, ভর্তি ও সিট বাণিজ্য, শিক্ষককে হেনস্থাসহ হেন কোনো অপরাধ নেই যা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে হচ্ছে না। র্যাগিং নিয়ে হাইকোর্ট নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? আইন এবং হাইকোর্টকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে পশুত্বের বর্বরতা।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ভালো ফলাফলের পর ভর্তি পরীক্ষায় লাখ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রতিযোগিতা করে মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পায়। এদের মধ্যে পরিবারের আদুরে অনেক সন্তান রয়েছেন যাদেরকে বাবা- মা কখনো গায়ে হাত তোলা তো দূরের কথা, বকা পর্যন্ত দেননি। অথচ সেই সন্তানই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর শিকার হচ্ছেন শারীরিক, মানসিক নির্যাতনের।
যার কোনটি ‘র্যাগিং’, কোনটি ‘গেস্ট রুম কালচার’ কিংবা ‘আদব’ শেখানোর নামে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেন এখন একেকটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের টর্চারের সেলে পরিণত হয়েছে। কেউ কেউ এসব নির্যাতনের প্রতিবাদ করছেন, বেশিরভাগই নিরবে সয়ে যাচ্ছেন। আবার কারো কারো ভাগ্য হচ্ছে বুয়েটের আবরারের মতোও। কখনো ছাড়তে হচ্ছে হল, ক্যাম্পাস, কখনো আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে অনুগত হতে হচ্ছে নির্যাতনকারীদের, না হলে বরণ করতে হয় আবরার ভাগ্য।
বাংলাদেশের মত একটি, সার্বভৌম দেশে এ ধরনের পঁচা সংস্কৃতি নিঃসন্দেহে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। সম্প্রতি ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপর পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইসলামী ছাত্রসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদ(চেয়ার)। পরিষদের মুহতারাম সভাপতি ছাত্রনেতা মুহাম্মদ ফরিদ মজুমদার ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্রনেতা মুহাম্মদ ইমদাদুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, উক্ত ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কঠিন নজরদারী করতে হবে।
+ There are no comments
Add yours