খবর ডেস্ক:
রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ (৩৪) হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার ব্যক্তিগত সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ।
দুই পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, শুক্রবার ভোরে ফাহিমের ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিলকে (২১) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে গত মঙ্গলবার বিকালে ফাহিমের মরদেহ তার নিজের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে তার ক্ষত-বিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে নিউইয়র্ক পুলিশ। পুলিশ জানায়, এক দিন ধরে তার কোনো খবর না পাওয়ায় খোঁজ জানতে ফাহিমের বোন ওই অ্যাপার্টমেন্টে যান। সেখানে গিয়ে তার খণ্ডিত মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেন তিনি।
তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, লাশ উদ্ধারের একদিন আগে অর্থাৎ সোমবার তাকে হত্যা করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস জানায় , ফাহিমের হাত-পা, মাথা সবকিছু খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছিল। তার দেহের কিছু অংশ প্লাস্টিকের বড় ব্যাগে রেখে দেওয়া হয়েছিল। কাছাকাছি একটি বৈদ্যুতিক করাত প্লাগড ইন অবস্থায় ছিল বলেও টাইমসের খবরে উল্লেখ করা হয়।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ফাহিমের কাছ থেকে কয়েক হাজার ডলার চুরি করে তার ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস। ফাহিম এ চুরির বিষয়টি জানতে পারলেও কাউকে জানায়নি। গোয়েন্দাদের মতে, এই কারণে তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যার পর ওই স্থানটি পরিষ্কার করার জন্য জীবাণুনাশক সামগ্রী কিনতে হত্যাকারী ম্যানহাটনের পশ্চিমের ২৩ নম্বর স্ট্রিটের একটি হোম ডিপোতে গিয়েছিলেন। সেসময় গাড়ির জন্য ভাড়া দিতে গিয়ে ফাহিম সালেহর সহকারী নিজের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যাকারী কালো পোশাক এবং কালো মাস্ক পরেছিলো সঙ্গে একটি ব্যাগও ছিল। সে ফাহিমকে ভবনের লিফট থেকে তার অ্যাপার্টমেন্টে পর্যন্ত অনুসরণ করে বাসার ভেতরে প্রবেশ করেছিল।
ফাহিমকে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে অজ্ঞান করে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা এই হত্যাকাণ্ডকে একটি পরিকল্পিত ও ‘পেশাদার হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফাহিম সালেহর জন্ম সৌদি আরবে। ২০০৯ সালে বেন্টলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশের পর তিনি ‘প্র্যাংকডায়েল’ নামের একটি অ্যাপ তৈরি করেন। জনপ্রিয় প্র্যাংকডায়েল অ্যাপ পরবর্তীতে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের একটি ব্যবসায় পরিণত হয়।
বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে পাঠাও ছাড়ার পর নাইজেরিয়ায় ‘গোকাদা’ নামে একইরকম আরেকটি স্টার্টআপের উদ্যোগ নেন তিনি।
সূত্র- দ্য ডেইলি স্টার
+ There are no comments
Add yours