খবর ডেস্ক
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান বলেছেন, করোনায় দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক নির্দেশনা ও নজরদারির কারণে গত মার্চ মাস থেকে আমরা সকলে মিলে করোনার প্রথম ধাপ অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছি। সরকারের আন্তরিকতায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সচিব বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে অক্সফোর্ড থেকে প্রথমাবস্থায় দেশে ৫০ লাখ করোনার ভ্যাকসিন আসবে।
এ লক্ষ্যে অক্সফোর্ডের সাথে সরকারের চুক্তি হয়েছে। ২৫ হাজার স্বাস্থ্য সহকারী ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করবে। যতদিন পর্যন্ত ভ্যাকসিন পাওয়া যাবেনা ততদিন পর্যন্ত আরো বেশি সতর্ক থেকে মাস্ক পরিধান শতভাগ বাধ্যতামূলক করতে হবে। মাস্ক পরিধান করলে করোনার ঝুঁকি থেকে ৯৮ শতাংশ নিরাপদ থাকা যায়। মাস্ককে ভ্যাকসিন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। এটার সাথে কোন আপোষ নেই। ছাড় নেই।
আজ ১৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় কোভিড-১৯ এর সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবেলা ও চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য সেবার সার্বিক উন্নয়নকল্পে সার্কিট হাউসে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী, সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আনোয়ার হোসেন, চসিক প্রশাসক মোঃ খোরশেদ আলম সুজন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস.এম হুমায়ুন কবির, চমেক হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক (ডা.) মোঃ নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও জেলা পুলিশ সুপার এস.এম রশিদুল হক।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম.এ সালাম, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, চিটাগাং চেম্বার প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল আলম, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, বিএমএ’র সহ-সভাপতি ডা. শেখ শফিউল আজম, বিআইটিআইডি’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, বিভাগীয় উপ-পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মোঃ শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মা-শিশু জেনারেল হাসপাতাল কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ মোরশেদ হোসেন প্রমূখ।
স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান বলেন, চায়না সরকারের অর্থায়নে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আশেপাশে ঢাকার আদলে একটি বার্ন ও প্লাস্টিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এজন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকার অচিরেই এ হাসপাতালের কাজ শুরু করবে। এখানে বার্ন ও প্লাস্টিক হাসপাতাল নির্মাণ হলে অগ্নিদ্বগ্ধদেরকে আর ঢাকায় যেতে হবেনা, নেয়ার পথে আর কোন রোগী মারা যাবেনা। মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা এখানে ইন্টার্নী করতে পারবে।
তিনি বলেন, সারাদেশে ৬১০টি হাসপাতালে স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৩০ হাজার চিকিৎসক ও ৬০ হাজার নন ক্যাডার চিকিৎসক কোভিড-১৯ চিকিৎসায় কাজ করে যাচ্ছেন। এই মুহুর্তে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট নেই। মার্চে করোনার শুরু থেকে ১ জন করোনা রোগীর চিকিৎসায় সরকার ব্যয় করছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যদি কোন করোনা রোগীর ভেন্টিলেশন ও আইসিইউ সাপোর্ট লাগে তাহলে তাদের ক্ষেত্রে সরকারের ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৪ লাখ টাকা। প্রবাসী বা রেমিটেন্স যোদ্ধাদের জন্য দেড় হাজার টাকার পরিবর্তে মাত্র ৩০০ টাকায় করোনা টেস্টের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছে সরকার। প্রবাসীদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বাসায় গিয়ে কোভিড টেস্টের ব্যবস্থা করা হবে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যেভাবে করোনার দ্বিতীয় ধাপ মোকাবেলা করছে এর চেয়ে আরো বেশি সতর্ক থেকে করোনা মোকাবেলা করতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহার সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতির সার্বিক বিষয় তুলে ধরেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীর।
+ There are no comments
Add yours