সন্দ্বীপ উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ রাসেলের বিরুদ্ধে সরকারী খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার নাম করে লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন চরাঞ্চলের একাধিক ভুক্তভুগী কৃষক।
ভুক্তভুগীরা জানান উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোহাম্মদ রাসেল আহম্মেদ একেক জনকে একেক পরিমাণ খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার কথা বলে কারো কাছ থেকে কড়া প্রতি আবার কারো কাছ থেকে একর প্রতি জায়গা দিবে বলে অর্থ হাতিয়েছেন। ভক্তভুগীদের মধ্যে বাউরিয়া ৫ নং ওয়ার্ড বেড়িবাঁধের মোহাম্মদ আজাদ বলেন, আমাকে ১০০ কড়া জায়গা দিবে বলে প্রতি কড়া ২ হাজার টাকা করে মোট ২লক্ষ টাকা চুক্তি করে।
আমি প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার টাকা দিয়েছি। বাকি টাকা যোগাড় করে রাখার কথা বললে আমি যোগাড় ধার কর্জ করেছি। কিন্তু আমাদেরকে একটা আবেদনপত্র দিয়েই দায় সেরেছে সার্ভেয়ার মুহাম্মদ রাসেল আহম্মেদ।
আরেক ভুক্তভুগী একই ওয়ার্ডের মোহাম্মদ হাশেম জানান আমি ৪ নামে দেড় একর করে মোট ৬ একর জমির জন্য মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েছি সার্ভেয়ার রাসেলকে। কিন্তু আমাকে আমার দখলে থাকা এক একর জমি মৌখিকভাবে নির্ধারণ করে দিলেও সেটির কোন দলিল বা কাগজপত্র দেননি সার্ভেয়ার। দলিলের কথা বললে তিনি আমাদেরকে একটি আবেদন ধরিয়ে দিয়ে আর কোন উত্তর দিচ্ছে না। এই বিষয়ে প্রশ্ন করলেই তিনি বিভিন্নভাবে ধমক দেন।
ভুক্তভুগী আজাদ প্রতিবেদককে জানান, সরকার ভূমিহীন কৃষকদেরকে খাস জমি দিবে চাষ করে কৃষি উন্নয়নের জন্য কিন্তু সার্বেয়ার জমি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাদেরকে সর্বশান্ত করছে। আমাদেরকে জমি না দিলে আমাদের থেকে নেয়া টাকা ফেরত দিলে আমরা কর্জ করে নেয়া টাকা পরিশোধ করে ঋণমুক্ত হতে পারব।
এই বিষয়ে, সার্ভেয়ার মোহাম্মদ রাসেলকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, অনেকে খাস জমির আবেদন করেছে কিন্তু সেগুলো প্রক্রিয়াধীন। টাকা নেয়ার অভিযোগ সত্য নয়।
টাকা নেয়ার বিষয়টি প্রমাণ করতে পারলে আমার যে শাস্তি হবে তা মাথা পেতে নিব। অন্যদিকে জানা গেছে, মোহাম্মদ রাসেলের পূর্বের কর্মক্ষেত্রেও বিভিন্ন কাজে অনিয়ম অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিভাগীয় মামলার তদন্ত চলছে।
এই ব্যাপারে মোহাম্মদ রাসেলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন একটা বিভাগীয় মামলার তদন্ত হয়েছে আমার বিরুদ্ধে কিন্তু সেই মামলার প্রতিবেদনে অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পায়নি তদন্ত কমিটি।
সার্ভেয়ারের অনিয়মের ব্যাপারে সন্দ্বীপ উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা এসি ল্যান্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সম্রাট খিসার কাছে জানতে চাইলে তিনি মানবকণ্ঠকে বলেন, খাস জমি বন্দোবস্ত দেয়ার সার্ভেয়ারের কোন এখতিয়ার নেই। ভুক্তভোগীদেকে সরাসরি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন। অভিযোগ পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সার্বেয়ারের সাথে কোন ধরনের অনৈতিক লেনদেন না করার অনুরোধ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব সম্রাট খিসা।
মিলাদ মুদ্দাচ্ছির : সন্দ্বীপ প্রতিনিধি
+ There are no comments
Add yours