
বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল নক্ষত্র, ক্ষণজন্মা চিত্রনায়ক মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ’র মৃত্যুর ২৭ বছর আজ। এত বছর পরও কালজয়ী এ নায়ক এখনো সমানভাবে আলোচিত, জনপ্রিয় ও প্রাসঙ্গিক।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনে নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে তার ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এঘটনায় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন সালমান শাহ’র বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই অভিযোগটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করার আবেদন করা হয়। এরপর সিআইডি, বিচারবিভাগীয় তদন্ত ও পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে হত্যা নয়, আত্মহত্যা করেছেন সালমান শাহ।
সালমান শাহ’র মৃত্যুর পর তার বাবা অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন। পরে তিনি ওই মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন জানালে অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সে সময় সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন।
২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী ছেলের মৃত্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান এবং ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেওয়ার আবেদন করেন। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে নারাজি আবেদন দাখিল করেন। নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহ’র হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারেন।
সর্বশেষ ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিবিআইর পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম ৬০০ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এর একদিন আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
এ বিষয়ে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন, এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি খারিজ করে দেন আদালত। আমরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন মামলা করেছিলাম, যা আদালত বিচারের জন্য গ্রহণ করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নথি তলব করেন। আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে শুনানি হবে। রিভিশন গ্রহণ হলে আমরা নিম্ন আদালতে তদন্ত চেয়ে আবার শুনানি করব। আশা করছি, আমরা ন্যায়বিচার পাব।
+ There are no comments
Add yours