আট মাসে ৩৬১ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

Estimated read time 1 min read
Ad1

চলতি বছরের প্রথম আট মাসে ৩৬১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে ছেলে ১৪৭ জন এবং মেয়ে ২১৪ জন। এসব আত্মহত্যার পেছনে সবচেয়ে বেশি দায়ী অভিমান। এ কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে ৩১.৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) সমীক্ষার ফল ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়।  দেশের ১০৫টি জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা এবং অনলাইন পোর্টালের আত্মহত্যার সংবাদ বিশ্লেষণ করে একটি সমীক্ষা প্রকাশ করেছে সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশন।

সমীক্ষা বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত অর্থাৎ গত আট মাসে আত্মহত্যা করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থী ১৬৯ জন, কলেজ শিক্ষার্থী ৯৬ জন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ৬৬ জন এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ৩০ জন। ২০২২ সালে প্রথম আট মাসে আত্মহত্যা করেছিল ৩৬৪ জন শিক্ষার্থী। আর বছর শেষে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৩২।

আত্মহত্যার কারণ বিশ্লেষণ করে আঁচল ফাউন্ডেশনের সভাপতি তানসেন রোজ বলেন, আগের আত্মহত্যার ঘটনায় প্রেমঘটিত সম্পর্কের দায় বেশি ছিল, এবার আত্মহত্যার ঘটনায় মূল কারণ হচ্ছে অভিমান।

সমীক্ষা থেকে জানা যায়, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ৩১.৩০ শতাংশ। আর খুলনা বিভাগে ১৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ১৪.১০ শতাংশ, রংপুরে ৮.৯০ শতাংশ, ময়মনসিংহে ১০ শতাংশ, রাজশাহীতে ১১.৯০ শতাংশ, বরিশালে ৮.৩০ শতাংশ। এ ছাড়া সিলেটে আত্মহত্যা করেছে ২.৫ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঢাকা শহরে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠার সহায়ক পরিবেশ না থাকায় আত্মহত্যার ঘটনা বেশি ঘটছে।

সমীক্ষা থেকে আরও জানা যায়, নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি। ৩৬১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নারী শিক্ষার্থী ৫৯.৩০ শতাংশ এবং পুরুষ ৪০.৭০ শতাংশ।

নারী শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার কারণ হিসেবে সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৬. ৬০ শতাংশ নারী শিক্ষার্থী অভিমান, ১৮. ৭০ প্রেমঘটিত, ৮. ৪০ শতাংশ মানসিক ভারসাম্যহীনতা, ৯. ৮০ পারিবারিক বিবাদ, ৫. ১০ শতাংশ যৌন হয়রানি এবং ১২.৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়াশোনার চাপ ও ব্যর্থতার কারণে আত্মহত্যা করেছে।

সমীক্ষায় দেখা যায়, আত্মহত্যার ঘটনায় স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। এদের বয়স ১৩ থেকে ১৯ বছরের মধ্যে। ৬৭.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী ছিল এই বয়সী। এদের মাঝে নারী শিক্ষার্থী ছিল ১৫৯ জন। অন্যদিকে পুরুষ শিক্ষার্থী ৮৪ জন।

সংবাদ সম্মেলনে আত্মহত্যা প্রতিরোধে আঁচল ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়। এগুলো হলো-টাস্কফোর্স গঠন; টোল ফ্রি জাতীয় হট লাইন নম্বর চালু; আবেগীয় অনুভূতি নিয়ন্ত্রণের কৌশল ও ধৈর্যশীলতার পাঠ শেখানো; স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এবং মানসিক বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে শেখানো; শিক্ষার্থীদের সহানুভূতি এবং বোঝার সঙ্গে সাড়া দেওয়া; আত্মহত্যা সতর্কতা চিহ্ন সম্পর্কে ধারণা বিস্তৃত করা; বিভিন্ন ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা; মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা ইন্স্যুরেন্স বিমার আওতায় আনা; গণমাধ্যমে দায়িত্বপূর্ণ প্রতিবেদন লেখা ও প্রকাশ; মানসিক দূরত্ব কমাতে উদ্যোগ গ্রহণ এবং মানসিক স্বাস্থ্য স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলক করা।

সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি ফরিদা ইয়াসমিন, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours