দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের আরেকবার দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে চলছে আজ। দিনক্ষণ ঠিক না হলেও নভেম্বর থেকে এই রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত নতুন রেলপথ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সেনাপ্রধান, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও চীনা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন।
ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শাহজাহান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-ভাঙ্গা রেল চলাচলের উদ্বোধনের পর শিগগিরই এ রেলপথ বাণিজ্যিকভাবে খুলে দেওয়া হবে। তবে এখনও দিন চূড়ান্ত হয়নি। এ দফায় ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে। শুরুতে তিনটি স্টেশনে ট্রেন থামার ব্যবস্থা থাকছে। এগুলো হলো: মাওয়া, পদ্মা (জাজিরা) ও শিবচর। মুন্সিগঞ্জের নিমতলা স্টেশনটিও চালুর চেষ্টা চলছে।
এ রেলপথের জন্য ভাড়া নির্ধারণে রেলওয়ে একটি প্রস্তাব তৈরি করেছে। এ অনুযায়ী পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে ভাঙ্গা যেতে যাত্রীদের আন্তঃনগর ট্রেনে (নন-এসি) চেয়ার কোচে ভাড়া গুনতে হতে পারে ৩৫৫ টাকা। এসি চেয়ারে ৬৭৯ টাকা। সব মিলিয়ে বাসের চেয়ে ট্রেনে গুনতে হবে ১০৫-১৭৯ টাকা পর্যন্ত বেশি।
ভাড়া প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে প্রতিটি গন্তব্যের বাস্তব দূরত্বের সঙ্গে পদ্মা সেতু ও গেন্ডারিয়া-কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের জন্য বাড়তি দূরত্ব যোগ করেছে রেলওয়ের কমিটি। রেলওয়ে সূত্র জানায়, পদ্মা সেতুর প্রতি কিলোমিটারকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব ধরা হয়েছে। একে রেলওয়ে পন্টেজ চার্জের জন্য বাড়তি দূরত্ব বলা হচ্ছে। আর গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ পর্যন্ত উড়ালপথের প্রতি কিলোমিটারকে ধরা হয়েছে ৫ কিলোমিটার। এ জন্যই ঢাকা থেকে ভাঙ্গার প্রকৃত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার হলেও রেলওয়ে আদায় করতে চায় ৩৫৩ কিলোমিটার দূরত্বের ভাড়া।
ভাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী বলেন, পদ্মা সেতু ও কেরানীগঞ্জের উড়ালপথের জন্য ভাড়া বেশি হবে। তবে যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথ চালু হয়ে গেলে ভাড়া কমে যাবে। ভাঙ্গা পর্যন্ত যাত্রীদের জন্য কোনো ছাড় থাকবে কি না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো ছাড় (ডিসকাউন্ট) রাখা হয়নি।
তবে কম রাখার নিয়ম রয়েছে। যাত্রী চাহিদার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময়ে এসব বিষয় বিবেচনার কথা জানান তিনি। তবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বাসের চেয়ে যেন ট্রেনের ভাড়া বেশি না হয় সে চিন্তাও আমাদের রয়েছে।
+ There are no comments
Add yours