কুড়িগ্রামে ১১ বছর পর শিশু হত্যার দুই আসামী গ্রেফতার

Estimated read time 1 min read
Ad1

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ১১ বছর পর চাঞ্চল্যকর শিশু হত্যার পলাতক আসামী মিন্টু বসুনিয়া (৩৭) ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (৩২)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১১ অক্টোবর) রাতে গাজীপুর জেলার বড়বাড়ি জয় বাংলা তিন রাস্তার মোড় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালের জানুয়ারী মাসে উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের গনকপাড়া গ্রামে পুকুরে মাটি কাটতে গিয়ে গ্রেফতারকৃত আসামী মিন্টু বসুনিয়া ও মামলার বাদী আসামীর আপন বড় ভাই মোঃ চাদ মিয়া ওরফে ভগলু তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই এলাকার বজরুল ইসলামের সাথে বাদী ও আসামী মিন্টু মিয়ার কথা কাটাকাটি হয়, এক পর্যায়ে আসামী মিন্টু বসুনিয়া ও তার বড় ভাই মামলার বাদীসহ প্রতিপক্ষ বজরুলকে ভাড়ের বাংখুয়া দিয়ে মারপিট করে। মারপিটের ফলে বজরুল গুরুত্ব অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে মুমুর্ষ অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পরে গুজব সৃষ্টি হয় যে, আহত বজরুল মারা গেছে। ঘটনার দায় থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্য এবং প্রতিপক্ষকে পাল্টা মামলায় ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে আসামী মিন্টু বসুনিয়া ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম অত্যান্ত সু-কৌশলে তার আপন ভাতিজি ৭ বছরের শিশু কন্যা চম্পাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাড়ির পার্শ্ববর্তী বাঁশঝাড়ে লাশ ফেলে রেখে খোঁজাখুজি করতে থাকে।

খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে আসামী মিন্টু মিয়াই বাঁশ ঝাড় থেকে শিশু চম্পার লাশ সনাক্ত করে।পরে মামলা রুজু হয় প্রতিপক্ষ বজরুল পরিবারের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার আসামী সহ বাদীর লোকজন প্রতিপক্ষ বজরুল এর ভাতিজা হাফিজুলকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন। তৎকালীন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উলিপুর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত মোঃ জাকির উল ইসলাম চৌধুরী মামলাটি সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ তদন্তকালীন সময়ে ঘটনার ভিন্নরুপ মোড় নেয়।

তদন্তের এক পর্যায়ে বাদীর আপন ভাই আসামী মিন্টু বসুনিয়াকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আসামী মিন্টু বসুনিয়া প্রতিপক্ষকে হত্যা মামলায় ফাঁসানোর জন্য নিজ স্ত্রীর সহযোগীতায় তার আপন ভাতিজি চম্পাকে হত্যা করার বিষয়টি স্বীকার করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আসামী মিন্টু বসুনিয়াকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়।

পরে তদন্তকারী অফিসার বজরুল পরিবারদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দিয়ে আসামী মিন্টু বসুনিয়া ও তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমের বিরুদ্ধে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করেন। আসামী মিন্টু বসুনিয়া উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগমসহ দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর যাবৎ পলাতক হয়ে আত্মগোপনে থাকেন।

গোপন তথ্যের ভিত্তিতে উলিপুর থানার এসআই আব্দুল বাতেন, এএসআই আকতারুজ্জামান অভিযান চালিয়ে বুধবার(১১ অক্টোবর) রাতে গাজীপুর জেলার বড়বাড়ি জয় বাংলা তিন রাস্তার মোড় থেকে তাদের দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। বৃহস্পতিবার(১২ অক্টোবর) দুপুরে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) গোলাম মর্তুজা বলেন, দীর্ঘদিনের চেষ্টায় তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক ওই দুই আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ইউনুস আলী

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours