স্থানীয় এমপির কথায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে বরখাস্ত করায় নাটোর জেলা শিক্ষা অফিসার মো. গোলাম নবীকে কঠোরভাবে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট।
আপনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং জনগণের সেবক। সরকারি অফিসার হিসেবে রাষ্ট্রের কাজ করুন। এমপির কথায় বেশি লাফালাফি করবেন না।
আজ (১৮ অক্টোবর) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
শুনানির এক পর্যায়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে ডায়াসের সামনে ডাকেন আদালত। এসময় আদালতকে জেলা শিক্ষা অফিসার বলেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার কারণে শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়নি। এমপির বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ায় সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
প্রশ্ন রেখে হাইকোর্ট বলেন, আপনি কেন তাকে বরখাস্ত করলেন? আওয়ামী লীগের একটি মিছিলে এমপির বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়ায় বরখাস্ত করলেন। এমপির বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া যাবে না? মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে না? আমরা যদি অন্যায় আচরণ করি, পত্রিকা কি লিখতে পারবে না? এটা তো হতে পারে না।
- একপর্যায়ে হাইকোর্ট ওই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি শিক্ষক থেকে শিক্ষা অফিসার হয়েছেন?
- জবাবে ওই শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, না। আমি প্রথমে টি.ও ছিলাম।
- তখন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ভুল হয়েছে।
এরপর আদালত বলেন, আগে শিক্ষকের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। না হলে আপনাকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। এরপর সহকারী শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন আদালত। জেলা শিক্ষা অফিসারকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করে আগামী ৭ নভেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. বশির আহমেদ। জেলা শিক্ষা অফিসারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী মোস্তাক আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।
+ There are no comments
Add yours