রাজনৈতিক সহিংসতা দমনে আরও কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২৮ অক্টোবরের আগে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে পুলিশের ‘ছাড় দেওয়ার’ মনোভাব ছিল।
তবে সেদিন বিএনপির মহাসমাবেশের সহিংসতায় কনস্টেবল আমিরুল ইসলাম পারভেজকে নির্মমভাবে হত্যা এবং পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলার পর বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে মাঠ পুলিশ। ওই হামলাকে গোটা বাহিনীর ওপর হামলা মনে করে জড়িতদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশ সদস্য পারভেজকে হত্যা, দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা এবং প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতিদের বাসভবনে হামলার বিষয়টি একেবারেই ভালোভাবে নেওয়া হয়নি। এসব ঘটনায় যারা সরাসরি জড়িত এবং যাদের ইন্ধনে এমন নাশকতা হয়েছে—কাউকেই ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না।
এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদেরও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। গতকাল শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দেওয়া বক্তব্যেও এমন আভাস মিলেছে। রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরোনো কারাগারে জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেতারা সিদ্ধান্ত দিচ্ছিলেন, আর কর্মীরা সেটির বাস্তবায়ন করছিলেন। তাই এ সহিংসতার দায় নেতারা এড়াতে পারবেন না।’
পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, তারা মনে করছে, বিএনপির মহাসমাবেশের দিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ভুয়া উপদেষ্টা মিয়ান আরেফিকে দিয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার ব্যবস্থা করে পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টার পরিকল্পনা ছিল। নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিবৃত রেখে আরও বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা করা হতো। কিন্তু পরিচয় ফাঁস হওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি। তা ছাড়া পুলিশ পেশাগত দায়িত্ব পালনে স্যাংশন বা এ ধরনের নিষেধাজ্ঞার ভয় যে করে না, সেটি সহিংসতায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার মধ্যদিয়ে প্রমাণ করেছে। সামনের দিনগুলোতেও কেউ যদি নাশকতা করে বা রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সহিংসতা করে—তাহলে তা শক্ত হাতেই মোকাবিলা করা হবে। সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে আইন অনুযায়ী অর্পিত দায়িত্ব পালনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পিছপা হবে না।
ডিএমপির এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১৩ থেকে ’১৫ সাল পর্যন্ত যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও এ ধরনের নাশকতা মোকাবিলার অভিজ্ঞতা রয়েছে পুলিশের। সে অনুযায়ী সামনের দিনগুলোতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানমাল ও সম্পদের ক্ষতি কেউ করতে চাইলে জিরো টলারেন্স দেখানো হবে। তবে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে পুলিশ সহায়তার মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করবে।
+ There are no comments
Add yours