ঢাকায় মুদি ব্যবসা করতেন বাচ্চু চৌধুরী। তার ছেলে মাস্টার্স পাস ইমতিয়াজ চৌধুরী ছিল বেকার। কানাডায় লাখ লাখ বেতনের সঙ্গে নানা সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখানো হয় তাদের। প্রস্তাবে রাজি হয়ে সম্পদ বিক্রি, ব্যাংক লোন এমনকি ধারদেনা করে ৭৫ লাখ দেন।
ছেলে ইমতিয়াজকে ভুয়া কাগজপত্রও দেওয়া হয়। অন্যদিকে বাবা বাচ্চুকে কানাডার পরিবর্তে সৌদি আরবে নিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায় করা হয়। কানাডায় যেতে না পেরে এভাবেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে পিতা-পুত্রের। পাশাপাশি নিঃস্ব হয়েছে গোটা পরিবার।
বাচ্চুর স্ত্রী আলেয়া খানম দৈনিক কালবেলাকে বলেন, এমনভাবে লোভ দেখানো হয়েছে, কিছুই বুঝতে পারিনি। স্বামী ও ছেলেকে কানাডায় পাঠাতে নিজেদের সম্পদ বিক্রি করেছি, লোনও নিয়েছি।
এ ছাড়া আত্মীয়স্বজন ও অন্য মানুষের থেকে সুদে টাকা নিয়েও তাদের দিয়েছি; কিন্তু আমার স্বামীকে সৌদি আরবে নিয়ে জিম্মি করা হয়। তাকে নির্যাতন করে মুক্তিপণ নিয়েও শেষ পর্যন্ত কানাডা পাঠায়নি। এখন তার কোনো খোঁজই পাওয়া যাচ্ছে না।
ছেলে ইমতিয়াজ চৌধুরী বলেন, অনেক স্বপ্ন ছিল ইউরোপ যাব; কিন্তু সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। বাবার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমাকে কানাডার ভুয়া কাগজপত্র দেওয়া হয়। যে কারণে বিমানবন্দর থেকে ফিরে এসেছি। আমাদের সাজানো-গোছানো সংসার ধ্বংস হয়ে গেছে।
স্বামীর খোঁজ না পেয়ে গত ৪ অক্টোবর স্ত্রী আলেয়া খানম বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে ঢাকার মানব পাচার অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন। তার জবানবন্দি গ্রহণ করে উত্তরা পশ্চিম থানাকে আবেদনটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন আদালত। মামলার আসামিরা হলো রাজিব কাজী, বসির মাতুব্বর, কাজী আনোয়ার হোসেন, দিল আফরোজা রুনা, কাজী রুহুল আমিন ও জহিরুল ইসলাম। এর মধ্যে রাজিব ও জহিরুল কারাগারে রয়েছে।
+ There are no comments
Add yours