গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংস ঘটনা থেকে শুরু করে চলমান হরতাল-অবরোধে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, বিস্ফোরণ এবং গুপ্তহত্যার বিবরণ তুলে ধরে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিএনপির একাধিক সূত্র থেকে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সোমবার বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাস ও কূটনৈতিক মিশনে চিঠি দিয়েছে তারা।
বিএনপি বলেছে, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে যাবে না। বরং রাজপথের আন্দোলন কর্মসূচি জোরদারের পাশাপাশি কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রেখেছে দলটি। কূটনীতিকদের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছে।
চিঠিতে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অগ্নিসংযোগ ও সংঘাত নিয়ে ক্ষমতাসীন দলকে দায়ী করে বিস্তারিত বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে চলমান গুম, খুন এবং সহিংসতার বিষয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করেছে দলটি।
আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি: রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে বিএনপি। দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছেন। গত সোমবার বাংলাদেশের বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাস ও মিশনে লিখিত চিঠি ও ডকুমেন্ট পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএনপি শেখ হাসিনার শাসনামলে সংঘটিত নিন্দনীয় অগ্নিসংযোগ ও সহিংস কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানায়। আমরা একটি নিরপেক্ষ ও সূক্ষ্ম তদন্তের দাবি জানাই এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার রাজনৈতিক সদস্য ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কর্মীদের সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করি,Ñযারা দেশব্যাপী ক্র্যাকডাউনের মাধ্যমে বিরোধী দলকে নির্মমভাবে দমন করতে এ পরিস্থিতিকে কাজে লাগায়।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং সিনিয়র আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, নির্বাচনে বিএনপি না এলে তা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে না। এখানে ইসি থেকে সরকারের ভূমিকা বেশি। বিএনপির সব দাবি মেনে নিতে হবে, আমি তা বলছি না। তবে সরকার অনেক কিছু ছাড় দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ইঙ্গিত দিতে পারে।
এছাড়া গত সোমবার বাংলাদেশে ‘বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ‘বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে’ বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
এসব বিষয়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ড. শাকিরুল ইসলাম খান শাকিল বলেন, শুধু বহির্বিশ্বের চাপ নয়, ইসির নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিএনপিসহ ১৭টিই তপশিল প্রত্যাখ্যান করছে। আওয়ামী লীগসহ ১৫টি দল স্বাগত জানিয়েছে। বাকি ১২টি দল তপশিলের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেনি। তাছাড়া বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাসদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও তপশিল প্রত্যাখ্যান করেছে। সুতরাং এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে জেনেবুঝে সাগরে লাফ দেওয়া।
+ There are no comments
Add yours