২০২২ সালে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা ছিলেন আব্দুল হান্নান। সেবার ৭ ফেব্রুয়ারি সপ্তম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত এ কর্মকর্তা বালাহাট ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে সদস্য প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে অবৈধভাবে জিতিয়ে দেবেন বলে ঘুষ লেনদেন করার অভিযোগ ওঠে।
সে সময় এ সংক্রান্ত একটি ফোনকলের অডিও রেকর্ডও ফাঁস হয়েছিল। প্রার্থীর কাছে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্তও করে নির্বাচন কমিশন। সেবার প্রার্থীকে জয়ী করতে সাড়ে চার লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
এরপর ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনের এক আদেশে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এবার সেই ব্যক্তি জাতীয় নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পেয়েছেন রাজশাহী জেলায়।
গত ১৩ মার্চ থেকে তিনি রাজশাহী জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে বোয়ালিয়ার থানা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। দেড় বছর পূর্বে তার ফাঁস হওয়া দুর্নীতির ফোন কল এবং তার বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি আবারও নতুন করে সামনে এলে জাতীয় নির্বাচনে যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার পর্যন্ত।
রাজশাহী-২ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন তুলেছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। তিনি বলেন, একজন নির্বাচন কর্মকর্তা ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থীর কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন এমন অভিযোগে বরখাস্ত হয়েছেন। তাকে জাতীয় নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বানানোর কথা শুনেছি। যদি তাই হয় তবে বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো নয়। খোঁজখবর নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানাবেন তিনি বলে জানিয়েছেন।
নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযোগ ওঠার পর গত দেড় বছরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে ঘটনাটি বিষয়ে তদন্ত করা হয়েছিল। তদন্তে তেমন কিছু প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে শুধু বদলি করা হয় অন্য থানায়। রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শাহিনুর ইসলাম বলেন, মে মাস থেকে তিনি রাজশাহী জেলা কার্যালয়ে থানা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় শাস্তি প্রদান করা হয়নি। ফলে আসন্ন নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে তার দায়িত্ব পালনে বাধা নেই।
এ বিষয় কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, আমি বর্তমান কর্মস্থলে ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ যোগদান করি। এ সময় বরখাস্ত হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি ভুয়া ছিল। অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়েছে বিধায়ই তো আমাকে নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব প্রদান করেছে।
+ There are no comments
Add yours