আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস। নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থসামাজিক উন্নয়ন, অধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতিবছর এই দিবসটি পালন করা হয়।
১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেগম রোকেয়া। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। আমৃত্যু তার স্বপ্ন ছিল সমাজে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা আর অধিকার নিয়ে বাঁচবে। নিজের গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধগুলোয় সেই স্বপ্নের কথাই তিনি লিখে গেছেন। কাজ করে গেছেন নারী শিক্ষার প্রসারে। বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, নারী-পুরুষের সমতার দাবি নিয়ে কলম আন্দোলনের মাধ্যমে উপমহাদেশের নারীদের জীবন পরিবর্তনের ধারা সূচনা করেছিলেন মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার মাধ্যমেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নারীর দুঃখ-দুর্দশা ও সমান অধিকারের দাবি বেগম রোকেয়ার সাহিত্যে জোরালোভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। বেগম রোকেয়া নারী সমাজকে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ও অধিকার সচেতন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়াস নিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন এবং কর্ম ও ধ্যানে ধারণ করতেন, ‘মেয়ে মানুষ নয়, মানুষ হয়ে বাঁচতে হবে, তবেই সার্থক মানবজনমের।’
তিনি বলেন, সরকার জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করেছে। পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিধিমালা ২০১৩, ডিএনএ আইন ২০১৪ এবং নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে এসব পদক্ষেপ মাইলফলক হয়ে থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বেগম রোকেয়ার জীবনাচরণ ও নারী শিক্ষার প্রসারে তার অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন সমাজ তথা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। তার এই উপলব্ধি ও আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আমি বাঙালি নারী শিক্ষার প্রসার ও নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। এ বছর যারা ‘বেগম রোকেয়া পদক’ পেয়েছেন আমি তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।
+ There are no comments
Add yours