(বাঁশখালী প্রতিনিধি) : চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে বাস্তুহীন বিধবা নারী ও তাঁর মেয়েকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের খোর্দ্দ রাতা গ্রামে গাছের শুকনো পাতা সংগ্রহকে (জ্বালানী) কেন্দ্র করে ফেরদৌসী বেগম (৫০)ও তাঁর মেয়ে নুরজাহান (১৮) কে মারধর করেছেন স্থানীয় মেদুলালের ছেলে রাশেদ রায়হান (৩০)। আহত ফেরদৌসী বেগম স্থানীয় মৃত নুরুল আলম এর স্ত্রী।
অনুসন্ধানে রাশেদ এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ পাওয়া যায়। স্থানীয় নেতা ও রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে সে বিভিন্ন অপকর্ম করেই যাচ্ছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একজন বয়োজ্যেষ্ঠ বাসিন্দা। উশৃংখল জীবন যাপনে অভ্যস্ত রাশেদ কিছুদিন আগে নিজের মাকে মারধর করে বাড়ী হতে বিতাড়িত হয় বলেও স্হানীয় লোকজন নিশ্চিত করেছেন।
নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ১ম স্ত্রী তাকে ডিভোর্স দিয়ে মামলা করলে বেশ কয়েকদিন জেলের ঘানি টানেন অভিযুক্ত রাশেদ । জেল থেকে বের হয়ে এখন ২য় সংসার শুরু করছেন সে। স্ত্রী সহ উঠেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় একটি পরিত্যক্ত ভবনে। সরকারি পরিত্যক্ত ভবনে আশ্রয় নিয়ে সে গত নির্বাচনে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করে।
যে ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন সে ভবনে ভুক্তভোগী ফেরদৌসী বেগম সহ আরো কয়েকটি বাস্তুহীন পরিবার বসবাস করে । মারধরের শিকার ফেরদৌসী বেগম বলেন, আমি একজন স্বামী হারা অসহায় নারী। সাঙ্গু নদীর ভাঙ্গনে নিজের ভিটেমাটি হারিয়ে এখানে অবস্থান করছি মেয়ে নিয়ে। রাশেদের নির্যাতন দীর্ঘদিন মুখ বুঝে সহ্য করে আসছি।
সোমবার বিকেলে আমি স্থানীয় একজনের রাস্তায় কাটা গাছের পাতা গুলো কুড়িয়ে নিই। পাতা গুলো কেন আমি একা নিলাম সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করলে। আমি বলি পাতা গুলো আমি চেয়ে নিছি, আমাকে দিছে এখানে আমার অপরাধ কোথায়। এটা বলার সাথে সাথে রাস্তায় থাকা গাছের ডাল নেই আমাকে বেদড়ক পিটাতে থাকে।
মা কে মারধর হতে উদ্ধারে মেয়ে এগিয়ে গেলে সে ও মারধরের শিকার হোন বলে জানান ভুক্তভোগী বিধবা। এই ব্যাপারে অভিযুক্ত রাশেদ বলেন, আমি একজন সমাজকর্মী। পাশাপাশি আমাদের বসবাস। এই মহিলা দীর্ঘদিন আমার নামে যাকে তাকে কুৎসা রটিয়ে আসছেন। সে এবং তার মেয়ে যখন দা নিয়ে কোপাতে চলে আসে।
মান সম্মানের ভয়ে চুপচাপ হজম করে গেছি। কিন্তু সেদিন এতটাই বাড়াবাড়ি করছিল নিজের মেজাজ ঠিক রাখতে না পেরে আমি ওকে দুইটা আঘাত করি। নিজের মাকে মাকে মারধরের ঘটনায় জানতে চাইলে সে বলে এসব আমার শত্রু পক্ষের অপপ্রচার। যেহেতু আমি রাজনীতি করি, নির্বাচন করেছিলাম।
নিজের ১ম স্ত্রীকে নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে সে জানায় আমার ষড়যন্ত্র করে জেলে পাঠানো হয়েছিল।নিজেকে নির্দোষ ও অসহায় বলে দাবি করেন অভিযুক্ত রাশেদ। স্থানীয় ইউপি সদস্য কুলসুমা বেগম বলেন, সে আমার কাছে আসলে তার (ফেরদৌসী) ও তার মেয়ের (নুরজাহান) গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছি।
আজ (বুধবার) রামদাস হাট পুলিশ ফাঁড়ি থেকে তদন্তে এসেছিল। আমরা যা দেখেছি তা সেখানে উল্লেখ করব। উপজেলার রামদাস হাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তপন বাগছি বলেন;’ আমরা খবর নিয়েছি তাঁদের আজ বিকেল চারটায় ফাঁড়িতে ডেকেছি, বিষয়টি অত গুরুতর কিছু নয়, ব্যাপক মারধরের ঘটনা ঘটেনি”। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।
+ There are no comments
Add yours