দীর্ঘদিন ধরে দেশে চলছে ডলার সংকট। এ সংকট উত্তরণের অন্যতম উৎস রপ্তানি আয়। কিন্তু সেখানে নেই সুসংবাদ। কারণ, চলতি অর্থবছরে অক্টোবর-নভেম্বরের পর ডিসেম্বর মাসেও রপ্তানি আয় কমেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাস পণ্য রপ্তানি বেড়েছিল। কিন্তু এরপর থেকেই ধারাবাহিক কমছে। গেল অক্টোবর রপ্তানি আয় কমে ১৩ দশমিক ৬৪ শতাংশ হয়েছে।
পরের মাস নভেম্বরে কমেছে ৬ শতাংশ। সর্বশেষ গত মাস, অর্থাৎ ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় কমেছে এক দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। ডিসেম্বর মাসে পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫৩০ কোটি ডলারের, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ কম এবং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এক দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কম।
এর আগে চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ৪৫৯ কোটি, আগস্টে ৪৭৮ কোটি এবং সেপ্টেম্বরে ৪৩১ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়।
সবমিলিয়ে গত জুলাই-ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ২ হাজার ৭৫৪ কোটি ডলার। এই রপ্তানি গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় মাত্র দশমিক ৮৪ শতাংশ বেশি। তবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ কম। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা ছিল তিন হাজার ১১ কোটি ডলার।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে তৈরি পোশাক ছাড়া অধিকাংশ পণ্যের রপ্তানি কমেছে। এর মধ্যে রয়েছে হিমায়িত খাদ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল, প্রকৌশল পণ্য ইত্যাদি।
ছয় মাসে পোশাক রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ছিল দুই হাজার ৫৩৯ কোটি ডলার। আলোচ্য সময়ে নিট পোশাকের রপ্তানি ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। তবে ওভেন পোশাক রপ্তানি কমেছে ৪ দশমিক ১২ শতাংশ। সবমিলিয়ে রপ্তানি আয় কমেছে বলে জানান ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
মূলত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার উৎসের কয়েকটি খাত রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম রপ্তানি, প্রবাসী আয় এবং বৈদেশিক ঋণ, বিনিয়োগ বা অনুদান। প্রবাসী আয় ও রপ্তানি বাড়লে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ বাড়ে, যা আন্তর্জাতিক লেনদেনে দেশের সক্ষমতা বাড়ায়।
এমন পরিস্থিতিতে ডলারের চাহিদা সামাল দিতে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) সময়ে ৬৭০ কোটি (৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সময়ে বাণিজ্যিক কিছু ব্যাংক থেকে এক বিলিয়ন ডলারের মতো অর্থ কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
+ There are no comments
Add yours