জ্বালানি তেল পাচার ঠেকাতে ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়নের তাগিদ

Estimated read time 1 min read
  • ট্যারিফ ভ্যালুর পরিবর্তে ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ণ করে দাম নির্ধারণ চান উদ্যোগক্তারা
  • বর্তমানে ট্যারিফ ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ণ করে প্রাইসিং করা হচ্ছে
  • ট্যারিফ ভ্যালুতে প্রাইসিং ফর্মুলা থাকলে তেল পাচার রোধ সম্ভব হবে না
  • প্রাইসিং ফর্মুলা পরিবর্তন না করলে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্থ হবে
  • তেল পাচার রোধে ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ণ করে প্রাইসিং ফর্মুলা প্রণয়ন করার বিকল্প নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা
  • অবাধে পাচার হচ্ছে আমদানিকৃত জ্বালানি তেল, অপচয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা, চাপ পড়ছে রিজার্ভে
  • কলকাতার জ্বালানি তেলের দামের সঙ্গে মূল্য সমন্বয় করার পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের
  • দেশে বর্তমানে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ মেট্রিক টন
  • জ্বালানি তেলের চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেল
Ad1

ঢাকা: প্রতিবেশী দেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশই এখন জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমন্বয় করে বিক্রি করছে। যখন আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে যাচ্ছে তখন দেশের বাজারেও বাড়ছে।

আবার আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে দেশের বাজারেও কমিয়ে আনা হয়। এখন প্রায় প্রত্যেকটি দেশ এভাবে চলছে। এতে তেল পাচারের ঝুঁকিটা থাকে না। কিন্তু বাংলাদেশই উল্টো পথে চলছে।

যার কারণে যখন বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যায়, তখন পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় জ্বালানি তেলের দামে ব্যাপক পার্থক্য তৈরি হয়। এতে বাংলাদেশ থেকে পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় তেলের পাচার বেড়ে যায়। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে স্বয়ংক্রিয় সমন্বয় পদ্ধতি চালু করার আগেই ইনভয়েস ভ্যালুতে শুল্ক মূল্যায়ন করে প্রাইসিং ফর্মুলা প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে তেল পাচার রোধ করা সম্ভব হবে। তা না হলে কোনোভাবেই এই তেল পাচার বন্ধ করা সম্ভব হবে না বলেও তারা জানান।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমরা এলসি করার সময় বেসরকারি ব্যাংকগুলো ডলারের মূল্য ১১০ টাকা হারে ধরলেও পেমেন্ট করার সময় তাদেরকে দিতে হচ্ছে ১২৫ টাকা। এতে প্রতি ডলারে বাড়তি ১৫ টাকা দিতে হচ্ছে তেলের কাঁচামাল আমদানিকারকদের। বিপিসি জ্বালানি আমদানিতে ট্যারিফ ভ্যালু হিসেবে যে পরিমাণ শুল্ক (৪০ ডলার) দিচ্ছে, বেসরকারি পর্যায়ের তার চেয়ে ৫০ শতাংশের বেশি শুল্ক দিতে হচ্ছে। এতে ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হচ্ছে, যা মুক্তবাজার অর্থনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি (অটোমেটেড প্রাইসিং ফর্মুলা) কার্যকর করার শর্ত দিয়েছিল। আইএমএফর শর্ত পূরণে ডিজেল, পেট্রল, অকটেনসহ জ্বালানি তেলের দাম বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখে নিয়মিত সমন্বয় করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শুরুতে এটি তিন মাস পরপর নির্ধারণের পরিকল্পনা ছিল। তবে এখন প্রতি মাসে দাম নির্ধারণের চিন্তা চলছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে মূল্য সমন্বয়ের প্রক্রিয়াটির এখন চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ করছে বিপিসি।

জ্বালানি তেলের ডাইনামিক প্রাইসিং বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, আমরা বেসরকারিখাতে তেলের বাজার ছেড়ে দিয়েছি। চলতি বছর এপ্রিলের মধ্যে দেশে জ্বালানি তেলের বাজারে ডাইনামিক প্রাইসিং ব্যবস্থা চালু হবে।

আইএমএফর কথা উল্লেখ করে অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, এই ফর্মুলা যেন শুধরানো হয়। যাতে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি না দিতে হয়। আবার ভোক্তাদেরও যেন অতিরিক্ত টাকা দিতে না হয়। ভারতে প্রতিদিন দাম সমন্বয় করা হয়। ভারতের ভোক্তারা এতে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছে। আমি মনে করি, আমাদেরও স্বয়ংক্রিয় দাম নির্ধারণের পদ্ধতি চালু করা উচিৎ। এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে চোরাচালানও কমে যাবে।

সার্বিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য পরিস্থিতি অনুযায়ী দাম নির্ধারণের বিকল্প নেই। জ্বালানির মূল্য না বাড়িয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্নীতি ও কাঠামোগত দুর্বলতা কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ মাশরুর রিয়াজ।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours