
মিয়ানমার সীমান্তে রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা সংকট আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রেবেশের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
মিয়ানমার সীমান্তে এখন আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় সেখানে অবস্থানরত রোহিঙ্গারা ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে রোহিঙ্গারা যেন কোনোভাবেই সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রেবেশ না করতে পারেন সীমান্তরক্ষীরা সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।
মিয়ানমার সীমান্তে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে সেখানের রোহিঙ্গারা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কয়েকদিন ধরে ছোটাছুটি করছেন। তারা এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে আশ্রয় নিচ্ছেন। এ অবস্থায় কোনো রোহিঙ্গা যেন অনুপ্রবেশ না করতে পারেন, তা নিয়ে সীমান্ত রক্ষীরা সজাগ রয়েছেন।
মিয়ানমার সীমান্তে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আসছে কি না, সে বিষয়েও নজর রাখছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য এখন কোনো উপযুক্ত সময় নয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস জানিয়েছেন, রাখাইনে নিরাপত্তা পরিস্থিতি এখন খুব কঠিন। মিয়ানমার সীমান্তে লড়াই হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য এখন উপযুক্ত সময় নয়। তবে আমাদের প্রত্যাশা রোহিঙ্গারা নিরাপদ ও মর্যাদার সঙ্গে যেন ফিরতে পারেন।
বর্তমানে ১১ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। এরপর থেকে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। এছাড়া প্রতি বছর রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ৩৫ হাজার শিশু জন্মগ্রহণ করছে। দিনে দিনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশের জন্য ক্রমশ বোঝা হয়ে পড়ছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন ত্রিপক্ষীয় ভাবে উদ্যোগ নিলেও সে প্রক্রিয়াও খুব ধীর গতিতে চলছে। এখন নতুন করে মিয়ানমার সীমান্তে সংঘর্ষ শুরু হওয়ায় প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ঝুলে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
+ There are no comments
Add yours