রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে মাত্র চার ঘণ্টার ব্যবধানে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ঘটনাস্থলে একজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পর একজন নিহত হন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন আরও ৭ জন।
শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর থেকে সন্ধ্যার আগে পৃথক তিনটি দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার প্রতিবাদ এবং মহাসড়কে স্পিডব্রেকারের (গতিরোধক) দাবিতে এলাকাবাসী ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।
সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগ গতিরোধকের কাজ শুরু করলে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয়। তবে মহাসড়কের তিনটি স্থানে বিক্ষুব্ধ কিছু লোক তিনটি গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার গোয়ালন্দ রেলগেট এলাকার আজাদ মন্ডলের ছেলে রনি মন্ডল (৩০), স্ত্রী মোছা. শিল্পীকে (২৭) নিয়ে মোটরসাইকেল ঘুরতে বের হন। বিকেল সোয়া ৫টার দিকে বেড়িবাঁধ সড়ক থেকে গোয়ালন্দের জমিদার ব্রিজ এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে পৌঁছেন।
এ সময় দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহগামী এসডি পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে দুইজন পড়ে যান। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করলে সন্ধ্যা সাতটার দিকে রনি মন্ডল মারা যান। তার স্ত্রী চিকিৎসাধীন আছেন।
এদিকে মোটরসাইকেলটি বাসের ইঞ্জিনের সাথে আটকে গেলে প্রায় ৫০০ গজ দূরে মোস্তফা মেটাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষণিকভাবে স্পিডব্রেকারের (গতিরোধক) দাবিতে মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। মহাসড়কের দুই পাশে ৪-৫ কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়।
খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা মুন্সী, ইউএনও জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইফতেখারুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মুকিত সরকার, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস ঘটনাস্থলে আসেন। ৭টার দিকে সওজ -এর লোকজন গতিরোধকের কাজ শুরু করলে অবরোধ তুলে নের এলাকাবাসী। তবে কিছু বিক্ষুব্ধ লোক মহাসড়কে থাকা এমএম পরিবহন, হানিফ পরিবহনসহ তিনটি যাত্রীবাহী বাসের সামনের কাচ ভাঙচুর করে।
এর প্রায় এক ঘণ্টা আগে বিকেল ৪টার দিকে জমিদার ব্রিজ এলাকায় একটি দ্রুতগামী পরিবহনের ধাক্কায় ভ্যানচালক রাজবাড়ী সদর উপজেলার মহাদেবপুর এলাকার কাসেম আলী (৬৫) তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪১) এবং মোছা. মোহনা (১৪) নামের তিনজন গুরুতর আহত হন। তাদের গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ দুর্ঘটনার প্রায় আড়াই ঘণ্টা আগে দুপুর দেড়টার দিকে গোয়ালন্দ বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে জমিদার ব্রিজ এলাকায় ঢাকাগামী গোল্ডেন পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় কাপড় ব্যবসায়ী আকবর মল্লিক (৬০) ঘটনাস্থলে মারা যান। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের মুকুন্দিয়া গ্রামের মৃত মোনছের মল্লিকের ছেলে।
+ There are no comments
Add yours