কাউকেই সমর্থন দেবে না আওয়ামী লীগ

Estimated read time 1 min read
Ad1

স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিচ্ছে না আওয়ামী লীগ।

ক্ষমতাসীন দলের এমন সিদ্ধান্তে যেন প্রার্থিতার জোয়ার বইছে। সিটি করপোরেশন ও উপজেলা নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্তরের আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে বিভিন্ন দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে বিপুলসংখ্যক প্রার্থী প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এতে বিভিন্ন এলাকায় সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিলেও তা নিয়ে চিন্তিত নয় ক্ষমতাসীন দল। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনপ্রিয় প্রার্থীরা জয়ী হলে একদিকে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে, অন্যদিকে এলাকার উন্নয়নে তারা যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারবেন—এমনটিই প্রত্যাশা আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক এমন প্রার্থীদের আশঙ্কা, শেষ মুহূর্তে দলের পক্ষ থেকে কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হলে তা নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এ ধরনের কোনো সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। আসন্ন নির্বাচনে মাঠের বিরোধী দল বিএনপি নির্বাচনে না আসার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় স্থানীয় সরকারের বেশিরভাগ পদে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা বেশি।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের মতোই স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখতে আগ্রহী ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। এমনকি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট আসনের এমপিদের থেকে প্রভাবমুক্ত রাখতে দলীয়ভাবে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা জোরালো হবে বলে অভিমত আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকদের।

জানা গেছে, আগামী ৯ মার্চ ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে নতুন মেয়াদে এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, এবং জেলা পরিষদের নির্বাচন ও উপনির্বাচন রয়েছে। ঈদের পরপরই সারা দেশে উপজেলা পরিষদে ধাপে ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী দেওয়ার বিধান থাকলেও কোনো দল প্রার্থী না দিলেও সমস্যা না থাকায় আওয়ামী লীগ সেই সুযোগ নিতে যাচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দলের তো কারও প্রতি সমর্থন থাকবে না—এটা নিশ্চিত করা হয়েছে। সুতারাং প্রার্থী বেশি হবে, যে জনপ্রিয় সেই নির্বাচিত হবে। প্রার্থী বেশি হলেও সংঘাত হবে না। কারণ নির্বাচন কমিশন শক্ত হাতে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে। যেমন করেছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে।’

ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৫ মে। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ইকরামুল হক টিটু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। তবে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রতীকে প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় এবার এই সিটিতে নির্বাচন জমে উঠবে বলে স্থানীয় নেতাকর্মীদের ধারণা। একই সঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রভাব এই নির্বাচনে পড়বে বলেও মনে করেন তারা।

অন্যদিকে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর আরফানুল হক রিফাতের মৃত্যুতে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ শূন্য হয়। এখানকার মেয়র পদের উপনির্বাচনেও প্রার্থীর ছড়াছড়ি। অন্তত ১০ জন এই উপনির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী। তাদের মধ্যে আছেন মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্ল্যাহ খোকন, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল ইসলাম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুর রহমান, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা, সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের মেয়ে তাহসিন বাহার সূচনা, ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম, দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সাবেক সভাপতি কবির ইসলাম শিকদার ও আনিসুর রহমান মিঠু।

একই ধরনের অবস্থা জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ পৌরসভায়। এখানে আওয়ামী লীগের অন্তত তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। সব মিলিয়ে অর্ধডজন প্রার্থী পৌর মেয়র হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামবেন। অন্যদিকে ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ ও উপনির্বাচনেও প্রার্থীর ছড়াছড়ি। দলীয় প্রতীক না থাকার সুবাদে ভোটের হিসাব-নিকাশ নতুন করে করছেন বিভিন্ন পদে আগ্রহী প্রার্থীরা।

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রার্থীদের জনপ্রিয়তার সঙ্গে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব মূল চাবিকাঠি হিসেবে ভূমিকা রাখে। আসন্ন স্থানীয় সরকার নির্বাচন যেন সব ধরনের প্রভাবমুক্ত হয়, সেজন্য নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও কাজ করবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours