আমির হোসেন, ঝালকাঠ জেলা প্রতিনিধিঃ
করোনা ভাইরাস(কোভিড-১৯) প্রতিরোধে গণ টিকাদান কর্মসূচির ১০ম দিন মঙ্গলবারে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে বিভিন্ন বয়সী মানুষের সাথে টিকা নেন প্রবীণ ব্যক্তিরাও। হাসপাতালের দ্বোতলায় টিকা প্রদান স্থানে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ৭ফেব্রুয়ারী থেকে শুরু হওয়া টিকাদান কার্যক্রমের দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে। অনেক প্রবীণ ব্যক্তি স্বজনদের সঙ্গে এসে টিকা নিয়ে বলেছেন, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে এখন নিরাপদ বোধ করছেন তারা।
প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস মোকাবেলার সম্মুখযোদ্ধাদের সঙ্গে বয়সে প্রবীণ ও মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকটি শ্রেণির নাগরিকরা প্রথম দিকে টিকা পাচ্ছেন। হাসপাতাল ঘুরে উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়েই মানুষকে টিকা নিতে দেখা গেছে। পুরুষ-নারীদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা দিতে আলাদা বুথের ব্যবস্থা রাখা হয়। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার আবু জাফর দেওয়ান বলেন, “দিকাদানে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।
সবাই সুশৃঙ্খলভাবে টিকা নিচ্ছেন। অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি, ডায়াবেটিস রোগী টিকা নেওয়ায় মানুষের মাঝে ভয় ও জড়তা কেটে গেছে। স্বেচ্ছাসেবকরা শৃঙ্খলা বজায় রাখছেন। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর বিশ্রামের ব্যবস্থা আছে।” ঝালকাঠি সরকারী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর রুস্তম আলী সদর হাসপাতালে টিকা নেন। তিনি বলেন, “টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স কোনো বিষয় নয়। বয়স কিংবা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার চিন্তা না করে সবারই টিকা নেওয়া উচিত। একথা প্রমাণিত যে, টিকা প্রটেকশন দেয়। কতদিন দেয় বা কতক্ষণ থাকবে, এটা
আমরা জানি না। কিন্তু প্রটেকশন দেবে, এটা নিশ্চিত। যাদের বয়স বেশি, যারা ভালনারেবল তাদের সবার টিকার আওতায় আসা উচিত।” ঝালকাঠি ডায়াবেটিস সমিতির সাধারন সম্পাদক হেমায়েত হোসেন হিমু টিকা নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সরকার ‘অত্যন্ত চমৎকার ব্যবস্থাপনায়’ টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
“আমি ছোটবেলা থেকে অনেক টিকা নিয়েছি। তখন তো টিকা নেওয়া অনেক কষ্টকর ছিল- ঘা হয়ে যেত, ইনফেকশন হয়ে যেত। আজকে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর কোনো প্রতিক্রিয়া অনুভূত হল না। মাত্র ৭-৮ সেকেন্ড সময় লাগে। ভয় পাওয়ার কোনা কারণই দেখছি না।”
ঝালকাঠি জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন আনু বলেন, “টিকা নিয়ে নিজেকে অনেক হালকা লাগছে। মনে হচ্ছে, অনেক বড় একটা বোঝা নেমে গেল। কোনো টেনশনের কারণ নেই। কোনো ব্যাথাও পাইনি।”
সবাইকে টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রবীণ ব্যক্তিরা বলেন, “করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য টিকার বিকল্প নেই। টিকা নিতে হবে সবাইকেই। আমরা টিকা নিলাম, আর আপনি নিলেন না, তাতে কিন্তু আমরা নিরাপদ ভাবতে পারি না।”
+ There are no comments
Add yours