বন্ধ হলো রাজধানীর ৬ ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার

Estimated read time 1 min read
Ad1

বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স প্রবেশপথে টানানো, তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ ও লেবার রুম প্রটোকল বাধ্যবাধকতাসহ ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি করতে অভিযান শুরু করেছে অধিদপ্তর।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে দুটি টিম রাজধানীর রামপুরা, মিরপুর ও মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন ক্লিনিক ও হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে। জানা গেছে, প্রথম দিন নির্দেশনা না মানায় রাজধানীতে মোট ৬টি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান মিরপুর কালশী, সহকারী পরিচালক ডা. মুহাম্মদ বিল্লাল হোসেন মোহাম্মদপুর এলাকায় বিভিন্ন ক্লিনিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ক্লিনিক শাখার সহকারী পরিচালক ডা. আহসানুল হক, ডা. মাসুদ রেজা খান, মেডিকেল অফিসার ডা. কাজী মো. সালেহীন তৌহিদ রামপুরা এলাকায় বিভিন্ন ক্লিনিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৬টি টিম পৃথকভাবে আগামীকাল (বুধবার) থেকে পূর্ণাঙ্গ অভিযানে নামবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ডা. মুহাম্মদ বিল্লাল হোসেন বলেন, আমরা মোট ১২টি প্রতিষ্ঠান দেখেছি, এর মধ্যে ৬টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছি। বাকিগুলোকে শোকজ করা হবে। বন্ধ করে দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর দুটির লাইসেন্স আপডেট ছিল না, বাকিগুলোর লাইসেন্সই ছিল না। মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ারে দুটি ব্লাড ব্যাংক (রেডিয়াম ব্লাড ব্যাংক রাজধানী ব্লাড ব্যাংক) ও একটি হাসপাতাল (টিজি হাসপাতাল) বন্ধ করেছি। আর ইসিবি চত্বরে আল হাকিমি চক্ষু হসপিটাল বন্ধ করেছি। এছাড়াও  কালশীতে এশিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও এইচএস ডায়ালাইসিস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে দুটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করেছি, এগুলোর লাইসেন্স ছিল না।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মেডিকেল অফিসার ডা. কাজী মো. সালেহীন তৌহিদ বলেন, আজকে আমরা কঠোর কোনো অভিযান পরিচালনা করিনি। মহাপরিচালকের নির্দেশনায় আমাদের একাধিক টিম মিরপুর ও রামপুরা এলাকায় কয়েকটি হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনায় সরকারের ১০ দফা নির্দেশনাগুলো ঠিকমতো মানছে কি-না, সেগুলো মনিটর করা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লাইসেন্স প্রবেশপথে টানানো, তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ ও লেবার রুম প্রটোকল বাধ্যবাধকতাসহ ১০ দফা নতুন নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একইসঙ্গে এসব নির্দেশনা আবশ্যিকভাবে পালন করতে হবে বলেও জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানটি।

নির্দেশনাগুলো হলো

১. বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিকের লাইসেন্সের কপি প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ পথের সামনে দৃশ্যমান স্থানে অবশ্যই স্থায়ীভাবে প্রদর্শন করতে হবে।

২. সব বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ ও সরবরাহের জন্য একজন নির্ধারিত দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকতে হবে। একইসঙ্গে তার ছবি ও মোবাইল নম্বর দৃশ্যমান স্থানে প্রদর্শন করতে হবে।

৩. যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম ডায়াগনস্টিক ও হাসপাতাল হিসেবে আছে, কিন্তু শুধুমাত্র ডায়াগনস্টিক অথবা হাসপাতালের লাইসেন্স রয়েছে, তারা লাইসেন্স পাওয়া ছাড়া কোনোভাবেই নামে উল্লেখিত সেবা প্রদান করতে পারবে না।

৪. ডায়াগনস্টিক সেন্টার, প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে যে ক্যাটাগরিতে লাইসেন্সপ্রাপ্ত, শুধুমাত্র সে ক্যাটাগরিতে নির্ধারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়া কোনভাবেই অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে না। ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্যাথলজি বা মাইক্রোবায়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি ও রেডিওলজি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করতে হবে।

৫. বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতালের ক্ষেত্রে লাইসেন্সের প্রকারভেদ ও শয্যা সংখ্যা অনুযায়ী সব শর্তাবলী বাধ্যতামূলকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।

৬. হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়োজিত সব চিকিৎসকের পেশাগত ডিগ্রির সনদ, বিএমডিসির হালনাগাদ নিবন্ধন ও নিয়োগপত্রের কপি অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে।

৭. হাসপাতাল, ক্লিনিকের ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের অপারেশন বা প্রসিডিউরের জন্য অবশ্যই রেজিস্ট্রার্ড চিকিৎসককে সার্জনের সহকারী হিসেবে রাখতে হবে।

৮. কোনো অবস্থাতেই লাইসেন্সপ্রাপ্ত বা নিবন্ধিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যতীত চেম্বারে অথবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া যাবে না। বিএমডিসি স্বীকৃত বিশেষজ্ঞ ছাড়া যে কোনো ধরনের অপারেশন/সার্জারি/ ইন্টারভেনশনাল প্রসিডিউর করা যাবে না।

৯. সব বেসরকারি নিবন্ধিত লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ক্লিনিকে লেবার রুম প্রটোকল অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

১০. নিবন্ধিত বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত হাসপাতাল, ক্লিনিকে অপারেশন থিয়েটারে অবশ্যই ‘Operation Theatre Etiquette’ মেনে চলতে হবে।

এ নির্দেশনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন রয়েছে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours