শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) ইফতার পার্টি আয়োজনের বিষয়ে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
রমজানের প্রথম দিন ঢাবির ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গণ-ইফতার কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়ার পরপর ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় সামাজিক মাধ্যমে। পরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিবাদে শামিল হন।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরো অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার পার্টির উপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) প্রথম রোজায় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), জহুরুল হক হল মাঠ, সূর্যসেন, জসীমউদ্দিন, মুহসীন হলের ভেতরের প্রাঙ্গণে গণ-ইফতার করেন শিক্ষার্থীরা।
দুই ক্যাম্পাসে ইফতার পার্টিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় জবিতে নীরব প্রতিবাদ জানিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই দুই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের আয়োজন করলে তাতে বাধা প্রয়োগ করে জবির প্রক্টোরিয়াল বডি।
অন্যদিকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গোলচত্বরে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ গণ-ইফতার কর্মসূচি পালন করে।
এদিন ইফতারের এক ঘণ্টা আগে থেকেই হল ও ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে একসঙ্গে ইফতার করার উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীদের আগমন শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের অনেকেই নিজ নিজ ইফতার সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই ইফতার সম্পন্ন হয়।
এর আগে গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ইফতার পার্টি আয়োজন না করতে অনুরোধ জানায় শাবি প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয় সেই বিজ্ঞপ্তিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ সাধারণ শিক্ষার্থী এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা রোজার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং শাবিপ্রবি ও নোবিপ্রবিতে ইফতার পার্টিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় দুই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এ ছাড়া তারা ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
চবির ফিন্যান্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইসতিয়াক হোসেন মজুমদার বলেন, কতিপয় দ্বিমুখী চরিত্রের বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তারা ঘটা করে বিভিন্ন পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুষ্ঠান আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করলেও রমজানের ইফতার পার্টির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। অথচ তারা সবসময় অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেন।
+ There are no comments
Add yours