হাটহাজারী উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার পর যেন আলাদীনের চেরাগ হাতে পেলেন এস এম রাশেদুল আলম। মাত্র ৫ বছরের হয়েছেন আঙুল ফুলে কলা গাছ।
বাৎসরিক আয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৩ লাখ টাকা। বেড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে স্ত্রীর নামে থাকা স্বার্ণালঙ্কারও।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফানামা বিশ্লেষণে দেখা গেছে এমন চিত্র। তবে কম যান না এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আরেক প্রার্থী ইউনুছ গণি চৌধুরী। তার বার্ষিক আয় ১৬ লাখ টাকা। তবে দুই প্রার্থীর চেয়ে আয় কম দেখিয়েছেন অপর প্রার্থী সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান। তিনি বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন মাত্র ৩ লাখ টাকা।
২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন এস এম রাশেদুল আলম। ওই বছর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা ও ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, রাশেদুল আলমের বার্ষিক আয়ে বেড়েছে প্রায় ১০ গুণ। এছাড়া স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তিতেও পরিবর্তন এসেছে তার।
৫ বছরে উপজেলা চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকাকালীন শুধু নিজের সম্পদ বেড়েছে তা নয়, বেড়েছে স্ত্রীর নামে স্বর্ণালঙ্কারও। ২০১৯ সালের হলফনামায় স্ত্রীর নামে ২০ ভরি স্বর্ণ দেখিয়েছেন তিনি। যার অর্জনকালীন মূল্য ধরা হয় ২ লাখ টাকা। অথচ ২০২৪ সালে জমা দেওয়া হলফনামায় দেড় লাখ টাকা অর্জনকালীন মূল্যে স্ত্রীর নামে ৪৫ ভরি স্বর্ণ দেখানো হয়েছে। যা ৫ বছরের ব্যবধানে কমেছে ৫০ হাজার টাকা।
গত ৫ বছরের ৩৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকার বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্টের মালিকও হয়েছেন তিনি। এত বিরাট অঙ্কের আয়ের বিপরীতে ২৭ লাখ টাকার ব্যাংক ঋণ দেখিয়েছেন এ প্রার্থী।
স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে অকৃষি জমির মূল্য বাবদ ১৪ লাখ ৮২ হাজার নিজের নামে এবং ৬৪ লাখ টাকা দেখানো হয়েছে স্ত্রীর নামে। আছে ২ হাজার ১৫২ বর্গফুটের অ্যাপার্টমেন্ট। যার মূল্য বাবদ দেখানো হয়েছে ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এছাড়া স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে যৌথ মালিকানাধীন ৮০০ শতক কৃষি জমি যার মূল্য ১০ লাখ টাকা এবং ৪০ শতক অকৃষিজ জমি যার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছে হলফনামায়। আছে যৌথ মালিকানাধীন দুই তলা দালান। যার মূল্য ১ কোটি টাকা।
হলফনামায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম রাশেদুল আলম নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আর এস ট্রেডিং, ইউনুছ গণি নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে মেসার্স বিল্ট টেক অ্যাসোসিয়েট উল্লেখ করেছেন। তাছাড়া সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমানের নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি রয়েছে মেসার্স ম্যাক্সিম কার্গো সিস্টেম লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব।
দলীয় প্রতীক না থাকায় স্বতন্ত্র পদে নির্বাচন করলেও তিন জনেরই রয়েছে রাজনৈতিক পরিচয়। তিনজনই যুক্ত সরকার দলীয় বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা এস এম রাশেদুল আলম আছেন উত্তর জেলা যুবলীগের সভাপতির পদে। ইউনুছ গণি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সোহরাব হোসেন চৌধুরী নোমান রয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে।
+ There are no comments
Add yours