নিহার বিন্দু চাকমা
বৌদ্ধধর্মীয় মহাসাধক শ্রাবক বুদ্ধ ও পরমপূজ্য আর্য্যপুরুষ পরিনির্বানপ্রাপ্ত শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের দীর্ঘ লাগিত স্বপ্ন সমগ্র ত্রিপিটক গ্রন্থ বাংলা ভাষায় প্রকাশনী “ত্রিপিটক পাবলিসিং সোসাইটি” এর উপদেষ্টা ও সম্পাদনা পরিষদের উদ্যোগে সর্বপ্রথম কাউখালী এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা-উপজেলার বিভিন্ন শাখা বন বিহারের ভিক্ষুসঙ্ঘকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এসময় অনুষ্ঠানে মহাস্থবির-স্থবির, ভিক্ষু-শ্রমণসহ ২২০জনের অধিক উপস্থিত ছিলেন। ভোরে বিনয়াঙ্কুর বন বিহারে সার্বজনীন উপাসনালয় শুভ উদ্বোধন করেন গামাঢ়ি ঢালা বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ বোধিপাল মহাস্থবির, পূজ্য বনভান্তের মেমোরিয়াল হল শুভ উদ্বোধন করেন পরম পূজ্য বনভান্তের শিষ্যসংঘের প্রধান ও রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির, ভিক্ষুসংঘের ভোজনশালা শুভ উদ্বোধন করেন পানছড়ি মনিপুর বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ বশিষ্ট মহাস্থবির।
আজ শুক্রবার (৫ মার্চ) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাউখালি উপজেলার অধীনস্থ পানছড়ি গ্রামের বিনয়াঙ্কুর বন বিহারে দিনব্যাপী মহাসমারোহে ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে মহতি পূণ্যানুষ্ঠান উদযাপন করা হয়েছে ৷ মহতি পূণ্যানুষ্ঠানে দূর-দূরান্ত থেকে আসা হাজারো পূণ্যার্থীর জনসমাগম হয়। এতে সকল প্রাণির হিতসুখ মঙ্গলার্থে ও বিশ্বশান্তি সমৃদ্ধি মঙ্গল কামনায় কাউখালী বিনয়াংকুর বন বিহারে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন, নব নির্মিত বুদ্ধমূর্তি উৎসর্গ, কৃত্রিম বোধিবৃক্ষ দান,হাতিমূর্তি দান, বুদ্ধমূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, হাজার প্রদীপ দান, বুদ্ধপূজা, সীবলী মূর্তি দান, শ্রদ্ধেয় বনভান্তের পূজা, বিশ্বশান্তি প্যাগোডার উদ্দেশ্যে টাকা দান, পিন্ড দানসহ নানাবিধ দান করা হয়।
সকালে প্রথমে উদ্বোধনী ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এতে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনা করেন রুবেল চাকমা, অন্যনা চাকমা, ছোঁয়া দেওয়ান, জুলিপ্র মার্মা, পার্কি চাকমা, সুরুমিতা চাকমা। এরপর অনুষ্ঠান মঞ্চে উপবিষ্ট পূজনীয় ভিক্ষু সংঘকে ফুলের তোরা দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এসময় অনুষ্ঠানে ত্রিসরণসহ পঞ্চশীল প্রার্থনা করেন চেলাছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বসন্ত কুমার চাকমা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিহার পরিচালনা কমিটির অর্থ-সম্পাদক অনিল কান্তি চাকমা ও কোহেলী চাকমা। বিশেষ প্রার্থনা পাঠ করেন রিটনা চাকমা।
বাংলায় ভাষায় প্রথম সমগ্র ত্রিপিটক অনুবাদ ও প্রকাশে যাঁরা বুদ্ধশাসনে অসামান্য অবদান রেখেছেন সেইসব ত্রিপিটিক অনুবাদক সম্পাদনা পরিষদের সভাপতি মধুমঙ্গল চাকমাসহ ১১জন ভিক্ষু-শ্রমণকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
বিশেষ সংবর্ধনা ও মহতি পূণ্যানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি
হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি বিদ্যানন্দ চাকমা, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ত্রিপিটক পাবলিসিং সোসাইটির সভাপতি মধুমঙ্গল চাকমা । এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন কাউখালী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অংপ্রু মার্মা, ৩নং ঘাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান জগদীশ চাকমা।
বিশ্বের সকল প্রাণীর হিত-সুখ মঙ্গল কামনায় ধর্মদেশনা প্রদান করেন, পরম পূজ্য বনভান্তের শিষ্যসংঘের প্রধান ও রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির,রাজবন বিহার থেকে আগত জ্ঞানপ্রিয় মহাস্থবির, রাজবন ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির, ফুরমোন আর্ন্তজাতিক ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ভৃগু মহাস্থবির, গামাঢ়ি ঢালা বন বিহারের অধ্যক্ষ বোধিপাল মহাস্থবির, রত্নাঙ্কুর বন বিহারে অধ্যক্ষ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির, শান্তিপুর অরণ্য কুঠিরের অধ্যক্ষ শাসন রক্ষিত মহাস্থবির প্রমূখ।
উল্লেখ্য, পরমপূজ্য বনভান্তের দীর্ঘ লালিত স্বপ্ন সমগ্র ত্রিপটক গ্রন্থ বাংলায় প্রকাশনী “ত্রিপিটক পাবলিসিং সোসাইটি” এর উপদেষ্টা পরিষদ ও সম্পাদনা পরিষদ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
উপদেষ্টা পরিষদ – পরমপূজ্য বনভান্তের শিষ্য সঙ্ঘের প্রধান ও রাজবন বিহারের আবাসিক প্রধান শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ প্রজ্ঞালংকার মহাস্থবির (প্রধান উপদেষ্টা), ফুরমোন আর্ন্তজাতিক ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ ভৃগু মহাস্থবির (সহকারী উপদেষ্টা), রাজবন বিহারের শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ সৌরজগৎ মহাস্থবির (উপদেষ্টা সহকারী), শান্তিপুর অরণ্য কুঠিরের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ শাসন রক্ষিত মহাস্থবির (উপদেষ্টা সহকারী)।
সম্পাদনা পরিষদ-
রাজবন ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ ইন্দ্রগুপ্ত মহাস্থবির (আহবায়ক), রাজবন বিহারের শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ বিধুর মহাস্থবির (সদস্য), শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ সম্বোধি স্থবির (সদস্য), শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ করুণা স্থবির (সদস্য), শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ বঙ্গিস স্থবির (সদস্য), শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ অজিত স্থবির (সদস্য), শ্রদ্ধেয় শ্রীমৎ সীবক শ্রামণ (সদস্য)।
+ There are no comments
Add yours