মিয়ানমার সীমান্তের নতুন পরিস্থিতিতে কী প্রস্তুতি বাংলাদেশের?

Estimated read time 1 min read
Ad1

 

ডেস্ক নিউজ:

বাংলাদেশের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তসহ বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ৮০ শতাংশেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ করা আরাকান আর্মির (এএ) সাথে যোগাযোগ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, সাবেক কূটনীতিক এবং শিক্ষাবিদরা।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (বিআইপিএসএস) আয়োজিত ‘রাখাইন আফটার দ্য ফল অব মংডু: ইমপ্লিকেশনস ফর বাংলাদেশ অ্যান্ড দ্য রিজিয়ন’ শীর্ষক এক আলোচনায় তারা এ আহ্বান জানান।

বিআইপিএসএস সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক ডিফেন্স এ্যাটাচে, লিবিয়ায় সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) মো. শহীদুল হক এবং ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক পারভেজ করিম আব্বাসি প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

আব্বাসি বলেন, ‘আমার মতে, আরাকান আর্মির সাথে কূটনৈতিকভাবে যোগাযোগ স্থাপনের এখনই উপযুক্ত সময়, কেননা অনেক ক্ষেত্রেই এটি একটি মানসম্পন্ন পদ্ধতি। তবে আমাদের সামরিক বিকল্পগুলোও উন্মুক্ত রাখা উচিত।’

ঢাকা যদি আরাকান আর্মির মতো বিদ্রোহী বাহিনীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে না পারে, তাহলে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সমস্ত সম্ভাব্য অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলগুলো খুঁজে বের করারও পরামর্শ দেন তিনি। রাখাইনে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে বিদ্রোহের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে বলেও সতর্ক উচ্চারণ করেন আব্বাসি।

মেজর জেনারেল (অব.) মুনিরুজ্জামান বলেন, রাখাইনের জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের উচিত একটি সুস্পষ্ট কৌশল প্রণয়ন করা। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘আমরা যদি সময়মতো আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ স্থাপন না করি, তাহলে বিকল্প দেখতে হবে। রাখাইন স্থলবেষ্টিত নয় এবং সামুদ্রিক রুটের মাধ্যমেও বহিরাগত যোগাযোগ স্থাপনের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে।’ ভারতের দৃষ্টিভঙ্গিতুলে ধরে, মুনিরুজ্জামান উল্লেখ করেন যে নয়াদিল্লি ঐতিহাসিকভাবে মিয়ানমারের জান্তার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখলেও, রাখাইনের পরিবর্তনশীল অবস্থার আলোকে আরাকান আর্মির সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে কৌশল নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) হক আরাকান আর্মির সাথে সম্পর্ক স্থাপনকে বাংলাদেশের জন্য একটি সম্ভাব্য ‘উইন-উইন সিচুয়েশন’ হিসেবে বর্ণনা করেন, যা শুধুমাত্র নিরাপত্তা নয়, অর্থনৈতিক স্বার্থের জন্যও উপকৃত হবে। তার দৃষ্টিতে, রাখাইনে আরাকান আর্মির আধিপত্য ভারতের জন্য একটি জটিল পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি কৌশলগত সুযোগ এনে দিতে পারে।

তিনি বলেন, এটি আমাদের জন্য সুযোগ। প্রথমবারের মতো আমরা চালকের আসনে আছি, বিশেষ করে ভারতের সাথে আমাদের স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করার জন্য।’

গত সপ্তাহে থাইল্যান্ডে এক বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন চলমান সীমান্ত ও রাখাইন সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আরাকান আর্মির মতো কোন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে ঢাকা যুক্ত হতে না পারার কথাও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মিয়ানমার বিষয়ে একটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় যোগ দেওয়ার পর হোসেন ঢাকায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মিয়ানমারকে জানিয়েছি যে সীমান্ত আর তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এটি এখন আরাকান আর্মির মতো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে। একটি রাষ্ট্র হিসাবে আমরা তাদের সাথে যুক্ত হতে পারি না। সীমান্ত ও রাখাইন সংক্রান্ত সমস্যাগুলো সমাধানে মিয়ানমারকে অবশ্যই একটি উপায় খুঁজে বের করতে হবে। যাতে সমাধান করা যায়।’

রাখাইনে আরাকান আর্মির ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং নতুন বাস্তবতা সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশে প্রভাব ফেলে এবং নতুন করে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের এ দেশে প্রবেশের শংকা সৃষ্টি হয়।
সূত্র: চ্যানেল আই

 

খবর বাংলা ২৪

নির্বাহী সম্পাদক, খবর বাংলা ২৪ ডট নেট

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours