
নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
ডেস্ক নিউজ:
নোয়াখালীতে এক যুবলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, প্রায় চার ঘণ্টা ধরে ধাপে ধাপে তাকে পেটানো হয়। পরে সেনা সদস্যরা এসে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রীর দাবি, মৃত্যুর আগে স্বামী হামলায় জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম বলে গেছে। তারা বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তবে দল দুটির নেতাদের দাবি, নেতাকর্মীরা এতে জড়িত নয়। নিহত ব্যক্তি জনগণের ক্ষোভের শিকার।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল সোয়া ৯টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে যাত্রাবাড়ী এলাকায় ওই যুবলীগ নেতার মৃত্যু হয়।
এর আগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে উপজেলার চরপাবর্তী ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ডের হাফেজ আব্দুর রহীম এতিম খানার সামনে তাকে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করা হয়।
নিহতের নাম আব্দুল কাদের মিলন (৩৫)। তিনি উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের আমিন মাঝি বাড়ির মো. ইসমাইলের ছেলে এবং ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুর রহীম রাকিব জানান, গত পাঁচ আগস্টের পর তার মিলন বাড়ি থেকে চলে যান। এরপর তিনি সৌদি আরব গিয়ে ওমরাহ পালন করেন। ঈদুল ফিতরের দ্বিতীয় দিন তিনি দেশে ফেরেন। শুক্রবার রাতে আমার অটোরিকশায় করে ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলায় তার অসুস্থ শ্যালককে দেখতে যান। রাত ৯টার দিকে ফেরার পথে কোম্পানীগঞ্জের চৌধুরীহাট বাজার এলাকার চুয়ানির টেক এলাকায় আমাদের অটো পৌঁছালে ২-৩টি মোটরসাইকেল ধাওয়া করে। ভাই বিষয়টি বুঝতে পেরে তার মামা শ্বশুর মাইন উদ্দিনকে মুঠোফোনে বিষয়টি জানায়। এরই মধ্যে বাইক আরোহীরা আমাদের ধরে ফেলে।
রাকিব জানান, হামলাকারীরা ভাইকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিয়ে ওই এতিম খানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে লোহার পাইপ দিয়ে ৪ ঘণ্টা ধরে ধাপে ধাপে পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। মাইন উদ্দিন আমাদের বাঁচাতে এলে হামলাকারীদের তোপের মুখে পড়ে তিনি চলে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে প্রথমে আমার ভাইকে হামলাকারীদের থেকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে তাকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী বিবি জুলেখা বলেন, স্বামী মৃত্যুর আগে তার ওপর হামলায় জড়িত ২০-২৫ জনের নাম বলে গেছে। তারা বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মাহমুদুর রহমান রিপন বলেন, এ ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত নয়। গত ১৫ বছর মিলন এলাকায় মাদক ও সন্ত্রাসের রাজত্ব চালিয়েছে। তিনি বিক্ষুব্ধ জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের শিকার।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মিজানুর রহমান বলেন, জামায়াত-বিএনপির লোকজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনার রহস্য বের করবে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
সূত্র: একাত্তর
+ There are no comments
Add yours