খবর বাংলা ডেস্ক :
ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তৈমুরে বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ১০১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে। টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক বাঁধ উপচে বন্যার পানি ছড়িয়ে পড়লে কয়েক হাজার বাড়িঘর নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ ফ্লোরেস থেকে পূর্ব তৈমুর পর্যন্ত বিস্তৃত।
ইন্দোনেশিয়াতেই মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এখনও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দেশটির দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার মুখপাত্র রাদিত্য জাতি সাংবাদিকদের বলেন, কাদা ও চরম প্রতিকূল আবহাওয়া বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। ধ্বংসস্তুপের পাহাড় অনুসন্ধান ও তল্লাশী অভিযান বাধাগ্রস্ত করছে।
পূর্ব ফ্লোরেসের দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার প্রধান আলফোন্স হাদা বেথান বলেন, আমরা ধারণা করছি অনেক মানুষ মাটিচাপা পড়েছেন। কতজন মানুষ নিখোঁজ রয়েছে তা সম্পর্কেও আমাদের স্পষ্ট ধারণা নাই।
তিনি আরও বলেন, বাড়ি-ঘর ছেড়ে আসা মানুষেরা ছড়িয়ে পড়েছেন। প্রতিটি উপ-জেলাতে হাজারো মানুষ। যাদের অনেকেই এখনও বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদের ওষুধ, খাবার ও কম্বল প্রয়োজন।
রবিবার প্রবল বর্ষণে নদীগুলি উপচে ওঠায় আশেপাশের সমস্ত অঞ্চল ভেসে যায়। এখন পরিস্থিতি ভয়াবহ, এমনটাই বলছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে বেড়াচ্ছেন। বাঁধ ছাপিয়ে বন্যার জল শহরে ঢুকে পড়ায় ভিটে হারিয়েছেন অনেকেই। ইন্দোনেশিয়ার পূর্বাঞ্চলে প্রত্যন্ত এলাকাগুলো জল-কাদায় ঢেকে রয়েছে। ব্রিজ, রাস্তা ঘর-বাড়ি কিছুই আলাদা করে চেনা যাচ্ছে না। এদিকে বন্যার জলস্রোত এমনই তীব্র যে উদ্ধারকারীর দল বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে পৌঁছেও ভেতরে ঢুকতে পারছেন না।
বাসির লঙ্গদায় নামে এক স্থানীয় ব্যক্তি নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে শিউরে উঠছিলেন বারবার। বিধ্বংসী বন্যার জল তাণ্ডব করতে করতে এগিয়ে চলেছিল তার গ্রাম দিয়ে। হঠাৎ শুনলেন এক চিৎকার এল আশেপাশেই কোথাও থেকে! চারজন আটকে ছিল একটা বাড়ি চাপা পড়ে। উদ্ধারকারীর দল সেখান থেকে তিনজনকে সরিয়ে আনতে পারে। আরেকজন পড়েই থাকেন। শেষে লঙ্গদায় তার কজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করে মৃত্যুর মুখ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসেন ওই আটকে পড়া ব্যাক্তিকে।
পরিস্থিতি এখনও সংকটজনক। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যে দেশবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই দুর্যোগে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন তিনি। গৃহহারা মানুষদের সাময়িক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার কথা ঘোষণা করেছেন।
+ There are no comments
Add yours