আমির হোসেন | ঝালকাঠি
গ্রীষ্মকালে সব প্রাণিকূলই অস্থির হয়ে পড়ে তীব্র গরমে। শরীর ঘেমে দুর্বল এবং তৃষ্ণার্ত হওয়ায় দেখা দেয় পানিশুন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ। তাই বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচার জন্য কেমিকেলমুক্ত চিকিৎসার জন্য সবারই প্রিয় ডাবের পানি। রমজান মাসে মুসলমানদের সারাদিন সিয়াম সাধনার পরে ইফতারিতে ১ গ্লাস ডাবের পানি তীব্র গরমের অবসাদ-ক্লান্তি দূর করে শরীরে যোগায় শীতল শান্তির পরশ। এসময় ১ গ্লাস ডাবের পানি পানিশুন্যতা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগ দূর করে শরীরকে শীতল করে।
নারিকেল ১২ মাসই ফলন হয়। তবে গ্রীষ্মকালে এর ফলনের পরিমাণ বেশি হওয়ায় বাজারে সরবরাহও বেশি দেখা যায়। ঝালকাঠিতে বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় এ মৌসুমে ডাবের উৎপাদন বেশি হয়। এবার ডাব উৎপাদন বেশি হওয়ায় এই জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। নারিকেল গাছ লাগানোর পরে প্রতিবছরের ফেব্রুয়ারিতে গাছের গোড়ায় সামান্য কাদা মাটি ও সার দিলে ভালো ফলন হয়। এছাড়া তেমন কোন যত্ন নেয়ার প্রয়োজন হয় না।
খুচরা ক্রেতা মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা ডাবের সাইজ অনুযায়ী ৩০/৩৫ টাকা দরে প্রতিটি ডাব ক্রয় করি। গাছে ওঠা ও সরবরাহের পরিশ্রম নিয়ে ৪৫ টাকা করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করি। পাইকাররা আমাদের কাছ থেকে ডাব কিনে ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যায়।
পাইকারী ক্রেতা সাইদুল ইসলাম শহিদ বলেন, খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে ৪৫ টাকা দরে ক্রয় করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় বড় শহরের মোকামে পৌছে দেয়া পর্যন্ত বহন খরচ, চাঁদা দিয়ে প্রতিটি ডাবে ৫০ টাকারও বেশি খরচ পড়ে। আমাদের কাছ থেকে আবার খুচরা বিক্রেতারা ৫৫টাকা দরে কিনে নিয়ে ৬০/৭০ টাকা দরে প্রতিটি ডাব বিক্রয় করে।
তবে চাষিদের অভিযোগ প্রান্তিক পর্যায়ের নারিকেল চাষীদের কাছ থেকে মধ্যস্ততাকারীদের হাত পেড়িয়ে ক্রেতা পর্যন্ত পৌঁছাতে দাম অনেক হলেও মূলত প্রকৃত চাষিরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না।
ঝালকাঠি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ জালাল বলেন, ঝালকাঠি জেলায় ১ হাজার ১৭৭ হেক্টর জমিতে নারিকেলের বাগান রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩শ ৯৫ হেক্টর, নলছিটি উপজেলায় ৩শ হেক্টর, রাজাপুর উপজেলায় ২শ ২০ হেক্টর, কাঠালিয়া উপজেলায় ২শ ৬২ হেক্টর জমিতে নারিকেল গাছের আবাদ রয়েছে। এতে কয়েক লাখ গাছ রয়েছে। যা ঝালকাঠির জনগণের চাহিদা মিটিয়ে সারাদেশের চাহিদা মিটাতে ভূমিকা রাখছে।
+ There are no comments
Add yours