জয়ন্ত রায় | কিশোরগঞ্জ
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও নীলফামারী কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন।তবে ভুট্টার আবাদে এখন প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পোকা ফল আর্মিওয়ার্ম। ফসল ধ্বংসকারী ক্ষতিকর এ পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুট্টা চাষিরা। কৃষকের লাভের ঐতিহ্য ফসল পরিপুষ্ট হওয়ার আগেই গাছের মূল-কাণ্ড ও কচি পাতা কুড়ে কুড়ে খেয়ে ঝাঝরা করে সাবাড় করছে ক্ষতিকর এসব পোকা। ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীনে পড়েছেন এসব কৃষক।
কৃষকের দাবি নামিদামি কোম্পানির বালাইনাশক প্রয়োগ করেও দমন করা যাচ্ছে না পোকার আক্রমণ। আর এই সংকটকালে উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকেও মিলছেনা তেমন কোনো সাহায্য সহযোগিতা এমন অভিযোগ কৃষকের। এখনই এই পোকা দমন করতে না পারলে ভুট্টার ফলনে মারাত্মক বিপর্যয় ঘটবে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়- চলতি মৌসুমে ৩ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার মাগুড়া সিঙ্গেরগাড়ী পাড়ের হাট সিনহা এগ্রো ফার্ম এলাকার সড়কের পাশে বিঘার পর বিঘা কৃষি জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ করা হয়েছে। ওই ভুট্টার ক্ষেত গুলোতে পোকার আক্রমণের ফলে কচি পাতাগুলো ও কাণ্ড খেয়ে ফেলায় ফলন না হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বেশি। বংশ বিস্তারের মাধ্যমে এই ভয়ানক পোকার আক্রমণ দিনের পর দিন ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে এক গাছ থেকে অন্য গাছে। এতে ভুট্টার গাছ গুলো কঙ্কালসার হয়ে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
ওই এলাকার সিনহা এগ্রো ফার্ম এবার ২০ একর জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ করেছেন। ভুট্টার ক্ষেতগুলো দেখভালের দায়িত্বে থাকা(ম্যানেজার)আফাজ উদ্দিন বলেন- চাষাবাদ কৃত সিনহা মালিকের ২০ একর জমিতে ব্যাপক হারে ফল আর্মি ওয়ার্ম পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ‘বালাই নাশক প্রয়োগ করেও দমানো যাচ্ছেনা এ পোকার আক্রমণ। কিছু দিন আগে আগাছা পরিষ্কার করার সময় পোকার আক্রমণ তেমন লক্ষ্য করা না গেলেও এখন দিনের পর দিন এ রোগের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে ভুট্টার ক্ষেতগুলো পোকার বসতঘরে পরিণত হয়েছে।
তিনি আরও জানান- দিনের বেলায় পোকার আক্রমণ যেমন তেমন রাতের বেলায় গাছ গুলো কুড়ে কুড়ে খাওয়ার নিধনযজ্ঞে মেতে উঠে বিধ্বংসী এ পোকা। মাঠ পর্যায়েও পাওয়া যাচ্ছে না কোন কৃষি সেবা।
চাঁদখানা ইউপি‘র চারমাথা মোড়ের আব্দুল আজিজ জানান- ২বিঘা জমির ভুট্টা গাছের আপাদমস্তক পোকায় খেয়ে সাবাড় করে ফেলেছে। একাধিকবার বালাইনাশক প্রয়োগ করেও কোনো কাজ হয়নি। সদর ইউপি‘র মুশা পাকার মাথার আবুল কালাম এবার ৭ বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষাবাদ করেছেন।
তিনি আরও জানান- পোকা দমনে কার্যকরী বালাই নাশক বাজারে না পাওয়ায় এ পোকার সঙ্গে যুদ্ধ করে ফসল ফলানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ভুট্টার আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে কৃষকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান- মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখতে হবে ফল আর্মিওয়ার্ম না অন্য কোন পোকার আক্রমণ। না দেখে নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি অফিসারগন ভুট্টা চাষীদেরকে রোগবালাই দমনে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে আসতেছেন।
+ There are no comments
Add yours