আকাশ মার্মা মংসিং | বান্দরবানঃ
বান্দরবানের থানচি, রুমা ও লামা উপজেলায় সদরস্থল’সহ বলিপাড়া, তিন্দু ও রেমাক্রী ইউনিয়নও লামা উপজেলার ইয়াংছা মৌজার সামুখাল থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন। থানচি নতুন নির্মানাধীন থানচি লিটক্রে সড়কের ধারে পাথরের বিশাল মজুতও গড়ে তুলছেন একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্র। অবৈধভাবে বিভিন্ন নদী,খাল ,ঝিড়ি ঝর্না ও ছড়া থেকে প্রাকৃতিক পাথর উত্তোলন পাচারকারীরা অবাধে পাচার করছেন। ঐ এলাকায় ষ্টোন ক্রাশিং মেশিনে (পাথর ভাঙার যন্ত্র)প্রকাশ্যে দিবারাত্রি পাথর ভাঙা হয়।
শহরস্থল টংকাবতি গহীন জঙ্গলে ভিতর চলছে পাথর উত্তোলন। থানচি হতে লিটক্রে সড়কেও চলছে অবাধে পাথর উত্তোলন। এইদিকে থেমে নেই লামা উপজেলার ইয়াংছা মৌজার সামুখাল থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনও । ফলে ভবিষ্যতেও পাহাড়ে বসবাসরত মানুষের পানি তীব্র পানি সংকটে ভোগার আশঙ্ক রয়েছে।
বিভিন্ন জায়গায় গহীন জঙ্গলে ঝিড়ি-ঝর্ণা, ছড়াগুলো থেকে অবৈধ ভাবে পাথর আহরণের ফলে পানি শুকিয়ে গেছে। শুকিয়ে গেছে পাথরের তলা থেকে পানি বের হওয়া স্রোতও। পাহাড়ে বন, ঝিড়ি, ঝর্ণা, ছড়াগুলো ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক পরিবেশ ভারসাম্য হারিয়ে মানুষের জীবন যাত্রা প্রকৃতি ও জীব বৈচিত্র্যসহ হুমকির মুখে স্থানীয় জনজীবন।
অবৈধ ভাবে পাথর আহরণের কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে আইলমারা ঝিড়ি, মাংগই ঝিড়ি, বালু ঝিড়ি, নাইক্ষ্যং ঝিড়ি, শিলা ঝিড়ি, মংগকগ্রী ঝিড়ি, পদ্ম ঝিড়ি, হাব্রু হেডম্যান পাড়া ঝিড়ি, বোডিং পাড়া ঝিড়ি, চমি পাড়া ঝিড়ি, লাকপাইক্ষ্যং ঝিড়ি, চইক্ষ্যং ঝিড়ি, কাইতাং পাড়া ঝিড়ি, কুংলা পাড়া ঝিড়ি, সিংত্লাংপি পাড়া ঝিড়ি, সালেক্যা পাড়া ঝিড়ি ও শেরকর পাড়া ঝিড়িসহ ঝিড়ি শাখা-প্রশাখা আরো ছোট বড় শতাধিক ঝিড়ি। এই সমস্ত ঝিড়ি, ঝর্ণা, ছড়াগুলো থেকে অবৈধ ভাবে পাথর আহরণের পাচার করে পাথর খেয়েও হজম হয় খেকোদের। কিন্তু পাথর উত্তোলন ও পাচার করার কারণে ঝিড়ি, ঝর্ণা, ছড়াগুলোতে বিশুদ্ধ পানির সংকটে পানি খেলেও হজম হয়নি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের। চরম ভোগান্তিতে জনজীবন চলছে।
এদিকে থানচি বাসীদের বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক ঝিড়ি, ঝর্ণা, ছড়াগুলোতে ইতিমধ্যে পানি শুকিয়ে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। লামা উপজেলায় আলেক্ষ্যং মৌজায়ও ইতি মধ্যে পানি শুকিয়ে গেছে। যার ফলে এলাকার সাধারণ মানুষের জীবনযাপন ও জীবন ধারণের উপর চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। ঝিড়িগুলোতে বিভিন্ন প্রজাতির শামুক, ছোট মাছ, ঝিড়ি চিংড়ি ও কাঁকড়াগুলো হারিয়ে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
অন্যদিকে কিছু সংখ্যক পার্শ্ববতী চকরিয়া, সাতকানিয়া, আমিরাবাদ, রুমা, লামা ও দোহাজারি এলাকার থেকে অসাধু ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় এলাকার প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী চক্রগুলো সরকারে দলীয় নাম ভাঙ্গিয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে থানচির বিভিন্ন এলাকায় ঝিড়ি, ঝর্ণা, ছড়াগুলো থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে দিবাত্রি পাথর পাচার কাজে অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয়ভাবে পাথর উত্তোলন ও পাচারের বাধা দিলেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী চক্রগুলো প্রভাবশালী হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ী পাথর খেকোদের হুমকিতে পাথর উত্তোলন ও পাচার করার বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।
+ There are no comments
Add yours