হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ; বোয়ালখালী হাসপাতালে নেই তিল ধারণের ঠাঁই

Estimated read time 1 min read
Ad1

আজিজুল হক চৌধুরী,বোয়ালখালী

চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে হঠাৎ দেখা দিয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। তীব্র ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি ভাব নিয়ে গড়ে অর্ধশতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। হঠাৎ করে গরম বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে করছেন বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।

এর সাথে নতুন মাত্রা যোগ করেছে তীব্র ভূ-গর্ভস্থ পানির সংকট, ফলে যত্রতত্র স্থান থেকে পানি পান করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। রোগীর চাপ সামলাতে না পেরে হাসপাতালের করিডোরে শয্যা বিছিয়ে রোগীর চাপ সামাল দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত শনিবার ৭৯ জন, রবিবার ৮৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশই পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত।

গতকাল সোমবার উপজেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডে রোগী তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ভ্যাপসা গরমে ফ্যানবিহীন একাধিক করিডোরে স্থান নিয়েছে অন্তত ২৫ জনের অধিক রোগী। অন্যদিকে, নির্ধারিত বেডের পাশে মেঝেতে শয্যা বিছিয়ে রোগী অবস্থান নিয়েছে একটু গরম থেকে বাঁচার জন্য। সুবিধা অসুবিধা নিয়ে রোগীর স্বজনরা একে অপরের সাথে বাক-বিতন্ডায় লিপ্ত হতে দেখা গেছে।

ঈদের বন্ধের অজুহাতে সুইপার স্বল্পতায় স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ চারদিকে। সুস্থ মানুষও রোগী হতে যেন বেশিক্ষণ লাগবে না। টয়লেট বাথরুমের অবস্থা ত্রাহি। দুর্গন্ধে যে কারও পেট থেকে নাড়ি ভুঁড়ি বের হওয়ার অবস্থা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্তব্যরত এক নার্স বলেন, বেশিরভাগ রোগী বমি পায়খানা বেডের পাশেই করছে। দোষ কাকে দেবেন? আমরা চেষ্টা করছি সেবা দিতে, একজন সুইপার আর কত পারে পরিষ্কার করতে?

কথা হয় সারোয়াতলী ইমামুল্লাচর থেকে শনিবার পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হওয়া আকতার হোসেন (৩৫) এর সাথে। তিনি বলেন, সেবা পাচ্ছি মোটামুটি। স্যালাইন দিয়েছে। রোগী বেশি, তারাও যাবে কোথায়? তিনি বলেন, পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারটি আরও কঠোরভাবে দেখা জরুরি।

চরণদ্বীপ পাঠানপাড়া থেকে ভর্তি হওয়া জিন্নাত খান (৪৩) জানান, আজ (সোমবার) ভর্তি হয়েছি। সিট নাই তাই মেঝেতে ফ্যানবিহীন গরমের মধ্যে বেঁচে থাকার যুদ্ধ করছি। এখনও ডাক্তার দেখেননি। নার্সরা দেখেছে। স্যালাইন দিয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. জিল্লুর রহমান জানান, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়াসহ নানান পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের চাপ বেড়েছে। রোগীর চাপ সামাল দিতে কষ্ট হচ্ছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির সংকট, তীব্র গরম, রাস্তার ও হোটেলের বাসি-পঁচা ও অপরিষ্কার খাবার থেকে ডায়রিয়া ছড়াচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের স্যালাইন সংকট নেই। সংকট পরিচ্ছন্ন কর্মীর। সরকারিভাবে একজনই সুইপার আছেন হাসপাতালে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours