সাদমান সময়, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের মিরসরাই পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাখের ইসলাম রাজুর বিরুদ্ধে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহতের নাম মো. আজিম হোসেন শাহাদাত (২০)। হত্যার আলামত হিসেবে শাখের ইসলাম রাজুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হোপ মা ও শিশু হাসপাপতালের একটি কক্ষে রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। হত্যার বর্ণনা জানতে নিহত আজিমের পিতা মো. আব্দুল বাতেন কে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার স্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের উদ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
নিহতের পিতা আব্দুল বাতেন জানান, শুক্রবার (২৫ জুন) বিকাল ৪টায় তার পুত্র সন্তান আজিম হোসেন শাহদাত (২০) কে বাসস্থান থেকে তুলে নিয়ে মিরসরাইয়ের হোপ মা ও শিশু হাসপাতালের ৬ষ্ট তলায় কমিশনার রাজুর কাছে নেওয়া হয়। কি জন্য তাকে ধরে আনা হয় তা জানা যায়নি।
নিহতের বাবা আব্দুল বাতেন বলেন, আমি খবর পেয়ে রাত ৮টায় হোপ হাসপাতালে গিয়ে দেখি লাঠি দিয়ে রাজু ও তার বাহিনীর ফরিদ, তারেক ও জাহিদ আমার ছেলেকে বেদড়ক মারধর করছেন। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। তারা আমাকেও আঘাত করতে করতে বলে এখানে কোন কথা বলা যাবে না, যাও চলে যাও।
কমিশনার রাজু তার হাতে থাকা গাছের লাঠি দিয়ে আমার ছেলের মুখের উপর জোরে আঘাত করলে তার সামনের দুটি দাঁত পড়ে যায়। এসময় তার মুখ থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। লাঠির আঘাত সহ্য করতে না পেরে ঘটনা স্থলেই মারা যায় ছেলেটি। মারা যাওয়ার আগে টেবিলে থাকা একটি বোতল থেকে পানি পান করতে চাইলেও রাজু পানি পান করতে দেয়নি।
তার বাবা আরো বলেন, আমার ছেলে কি এমন দোষ করলো যে তাকে একেবারে মেরে ফেলতে হবে। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নিহত আজিমের মা রাজু কমিশনারের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো আর পিতা আব্দুল বাতেন একটি বেকারীতে কাজ করে। তাদের গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঁইয়া উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হাসানগনিপুর এলাকায়। তারা দীর্ঘদিন মিরসরাই পৌরসভার আমজাদ মেম্বার বাড়িতে নুর হোসেনের ঘরে ভাড়া থাকতেন। সেখানে গিয়ে দেখা যায় তাদের ঘরে তালা দেওয়া সকাল থেকেই তাদের খোজ পাওয়া যাচ্ছেনা।
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত কাউন্সিলর শাখের ইসলাম রাজু পলাতক আছেন। তার পরিচালনাধীন হোপ মা ও শিশু হাসপাতাল ও তার বাসায় খোজ নিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। তার ভাগিনা মেহেদি জানান, রাতে তিনি বাসায় ফিরেন নাই। এছাড়া হোপ হাসপাতালে খবর নিয়ে জানা যায় সকালে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন, রাতে হাসপাতালে ছিলেন।
এদিকে শনিবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন পুলিশের উদ্ধর্তন কর্মকতারা। তারা হত্যার আলামত হিসেবে রক্তের দাগ লেগে থাকা তোষকটি জব্দ করেছেন।
মিরসরাই থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, নিহতের পিতা আব্দুল বাতেন বাদি হয়ে মিরসরাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। আসামিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার অভিযান পরিচালনার প্রক্রিয়াও চলছে।
+ There are no comments
Add yours