আজিজুল হক চৌধুরী :::
চট্টগ্রামঃ সপ্তাহ দুয়েক পরেই আসছে মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। আসন্ন কোরবানির ঈদকে ঘিরে ইতিমধ্যে দেশের অন্যান্য জায়গার মত পশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত বোয়ালখালী উপজেলার খামারীরাও।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবারে কোরবানির জন্য বোয়ালখালীতে ৩৮ হাজার ২৯০টি গবাদিপশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গরু ২৬হাজার ১০০টি, মহিষ ৪৪৫৬টি, ছাগল ৬হাজার ১২৯টি, ভেড়া ১হাজার ৬০৮টি। এছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকা থেকেও বোয়ালখালীর হাটগুলোতে এক তৃতীয়াংশ গরু নিয়ে আসেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক দূরাবস্থার কারণে পশুখাদ্য ও লালনপালনে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তা পশু বিক্রি করে উঠবে কি না এবং ন্যায্য মূল্য পাবেন কিনা সেই শঙ্কায় রয়েছেন খামারীরা। কিন্তু ক্রেতারা তা মানতে নারাজ।
ঈদের বাকি ১৫ দিন মত থাকলেও চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পশুর হাটগুলো শূন্য পড়ে রয়েছে। তবে ইতিমধ্যেই কোরবানির পশুর হাটগুলো পশু বিক্রির জন্য সকল প্রস্তুতি শেষ করেছেন। প্রশাসনের নির্দেশ পেলে তারা বেচা-কেনা শুরু করবেন। উচ্চ মূল্যের কারণে শংকিত ক্রেতারাও।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, স্বাস্থ্য বিধি মেনে কোরবানির জন্য গবাদি পশুর হাট বসানো হবে। ওইভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি রয়েছে। তবে কয়টি স্পটে পশুর হাট বসবে সেটি মিটিং করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হবে।
সরে জমিন ঘুরে দেখা যায়, বোয়ালখালীতে ৬টি গবাদিপশুর বড় হাট বসে। উপজেলার মুরাদ মুন্সির হাট, নুরুল্লাহ মুন্সির হাট, হাজীর হাট, কালাইয়ার হাট, চৌধুরী হাট ও শাকপুরা চৌমুহনী বাজারসহ বেশ কিছু স্থানে কুরবানি উপলক্ষে পশু বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এখনো পশুবিহীন ওইসব স্থান ফাঁকা পড়ে আছে।
উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের বাসিন্দা খামারী মোঃ রাসেল বলেন, “গো-খাদ্যের মূল্য বেড়েছে। বাজারে ভূসি কেজি প্রতি ৪০ টাকা, সয়াবিন কেজি প্রতি ৫২ টাকা, মটরের ছোলা কেজি প্রতি ৬৫ টাকা, খৈল ৪৫ টাকা। এছাড়া প্রায় সব রকমের গো-খাদ্যের দাম বাড়তি। বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যক্তিগত ঋণ নিয়ে ৮ টি গরু মোটাতাজা করেছি। ভালো দাম না পেলে লোকসান গুণতে হবে।”
চলমান করোনা পরিস্থিতিতে খামারীদের সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে সরকার। ইতমধ্যে গো-খাদ্য বাবদ ১ম পর্যায়ের প্রায় ১৩’শ জনকে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে ১ হাজার জন প্রণোদনার টাকা তাদের মোবাইলের মাধ্যমে বুঝে পেয়েছেন। বাকী প্রায় ৩’শ জনকে পর্যায়ক্রমে কয়েকটি ধাপে প্রণোদনা দেওয়া হবে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় ১৩’শ খামারীকে সর্বনিম্ম ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫’শ টাকা পর্যন্ত প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। যারা বাকী রয়েছেন তারাও পেয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সেতু ভূষণ দাশ বলেন, তারা বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রায় ১৩’শ খামারীকে ১০-২২ হাজার ৫’শ টাকা করে প্রণোদনা দিচ্ছেন তার মধ্যে ১ হাজার জন পেয়ে গেছেন। বাকিরাও অতিসত্বর পেয়ে যাবেন।
+ There are no comments
Add yours