বৃদ্ধা মায়ের দায়িত্বে পঙ্গু মেয়ে সহ ৫ নাতি-নাতনি! একটা হুইল চেয়ার পাইনা, ভাতা-ঘর কাই দিবে !

Estimated read time 1 min read
Ad1

বিপুল মিয়া,ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

বিয়ের পর থেকে জীবন-যুদ্ধে কখনো ঢাকায় পোশাক কারখানায় কখনো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঁটাতার পেরিয়ে দিল্লীর ইটভাটায় কাজ করেছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের চর বড়লই এলাকার সামরুল হক (৪৭) ও মর্জিনা বেগম (৪২) দম্পতি। ঘরে চার ছেলে এক মেয়ে। পড়াশুনা করাতে পারেনি। কষ্টের মাঝে চলতো সংসার।
পাঁচ বছর আগে হঠাৎ শরীলে প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে অসুস্থ হন মর্জিনা। সহায় সম্বল শেষ করেও স্বাভাবিক হতে পারেননি। চিকিৎসায় গেছে গরু-ছাগল। করতে হয়েছে ধার-দেনা। হাত-পা ব্যাঁকা ও অবস হওয়ায় চার বছর ধরে একা চলাফেরা করতে পারে না। পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে তাকে। এমন অবস্থাতে স্বামীও ছেড়ে যান তাকে। রেখে যায় পাঁচ সন্তান। বিয়ে করেন অন্যত্র। প্রায় চার বছর ধরে স্ত্রী-সন্তানদের খোঁজ নেননা স্বামী সামরুল।

বড়ভিটা ইউনিয়নের বাংলাবাজার বড়লই গ্রামে বৃদ্ধা মায়ের বাড়ীতে সন্তান নিয়ে পঙ্গু মর্জিনার সময় যাচ্ছে। ঠিকমতো কথাও বলতে পারে না মর্জিনা।
পরিবারের আয় বলতে বৃদ্ধা মায়ের বয়স্ক ভাতা। তা দিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন যায়! পাঁচ শতক মাটিতে ভাঙ্গা চুড়া টিনসেট ঘর। ছোট চালার ঘর একটি। তারও টিনে ফুটো হওয়ায় বৃষ্টির পানি পড়ে ঘরের ভিতরে। টিনের উপর পলিথিন দিয়ে পানি আটকানোর চেষ্টা করলেও পানি ভিজিয়ে দেয় সব।

এদিকে অসুস্থ মেয়ে ও নাতি-নাতনি বাড়ীতে আসার পর থেকে মেয়ের পঙ্গু ভাতা ও সরকারী পাঁকা ঘরের জন্য মর্জিনার মা বৃদ্ধা আবিয়া বেওয়া চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে ছোটাছুটি করলেও কিছু মেলেনি।

কান্নাজড়িত কন্ঠে আবিয়া বেওয়া (৬৮) জানান, ১০ বছর আগে স্বামীকে হারিয়েছি। এদিকে অসুস্থ পঙ্গু মেয়েসহ নাতি-নাতনিকে ফেলে বিয়ে করে ঘর-সংসার করছে পাষষন্ড জামাই। গত পাঁচ বছরেও খোঁজ নিতে আসেনি। মেয়েটার করুণ পরিনিতি দেখে একজন পুরাতন হুইল চেয়ার দিছে বাহে। তাও নষ্ট।একান হুইল চেয়ার কিনতে না পারায় মেয়েটা সারাদিন ঘরেই বন্ধী হয়ে কাঁটান। ভাতার টাকা দিয়া ৭ জনের সংসার। অনেক কষ্ঠে খ্যায়া না খ্যায়া বেঁচে আছং বাহে। বেটিটার জন্যে এখ্যান হুইল চেয়ার কিনে দিবার পাং নাই।

তিনি আরও জানান, টাকা দিতে পারিনি বলে মেয়ের ভাতাসহ সরকারি ঘর পাইনি। সরকার অসহায় মানুষকে পাঁকা ঘর দিচ্ছে। আমার মতো অসহায় মানুষের কপালে কি পাঁকা ঘর জুটবে বাহে। দরিদ্র পরিবারটি একটি হুইল চেয়ার কেনার সামর্থ্য না থাকায় আপাতত অসুস্থ পঙ্গু মেয়ের জন্য সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে একটি হুইল চেয়ারের আকুতি জানিয়েছেন অসহায় বৃদ্ধা মা আবিয়া বেওয়া ।

স্থানীয় আশরাফুল ও খোকন মিয়া জানান, এমন অসহায় পরিবার জীবনে দেখি নাই। এদের এতো কষ্ট। কিভাবে যে তারা বেঁচে আছে এক আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। পুরাতন ঘর তাও ফুটো অনেক কষ্টে তারা সেখানেই এতোগুলো লোক গাদাগাদি করে থাকেন। তাই কিছু দিন আমরা লাকাবাসী মিয়ে একটা টিনের চালা করে দেয়। সেখানেই আবিয়া বেওয়ার অসুস্থ মেয়েটা তার সন্তানদের নিয়ে থাকেন। একটা হইল চেয়ারের অভাবেই মর্জিনা সারাদিন ঘরের মধ্যে থাকেন। কেউ যদি মর্জিনার জন্য একটা হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিতেন খুবেই ভালই হতো।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours