বান্দরবানে টিকা গ্রহন করতে আসাদের উপচে পড়া ভীড়, স্বাস্থ্য বিধি উপেক্ষা

Estimated read time 1 min read
Ad1

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান::

বান্দরবান জেলায় দিন দিন বেড়েই চলছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।তারই সাথে করোনা ভ্যাকসিন কেন্দ্রগুলোতে ভ্যাকসিন গ্রহনকারীদের উপচে পড়া ভিড়। যা স্বাস্থ্যবিধি মানা্র কোন বালাই নেই বললেই চলে।

বান্দরবান সদরের একটি হাসপাতাল ও সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ২টি কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে।বান্দরবান সদর হাসপাতালে প্রতিদিন আর স্বাস্থ্য উপজেলায় কমপ্লেক্সে-এর সপ্তাহে দুইদিন করোনা ভ্যাকসিন টিকা প্রদান করছেন।তারই মধ্যে বান্দরবান সদর হাসপাতালে বেশি ভিড় জমেছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৭টা থেকে টিকা নিতে আসা লোকজন যে যার মত করে ভ্যাকসিন টিকা সংগ্রহ কার্ড রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছাসেবকদের নিকট জমা দেয়।এক পর্যায়ে সেই কার্ড রশিদ স্বেচ্ছাসেবকদের থেকে সংগ্রহ করতে হয়।

শেষমেষ গাদাগাদি করে লাইনের দাঁড়িয়ে টিকা গ্রহণ করতে হচ্ছে। যা এক ধরনের মিলন মেলা পরিণত হয়েছে।করোনা টিকা নিতে আসা একজন অপরজনের সাথে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়ছে।

আর স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্বের নিয়ম তোয়াক্কা না করে নিজ খেয়াল খুশি মতো যতযত্র ঘোরাঘুরি করছে এমন চিত্র লক্ষ্য করার গেছে।

অন্যদিকে একই চিত্র দেখা যায় বান্দরবান সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও।এভাবেই চলতে থাকলে করোনার সংক্রামণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বান্দরবান সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে চার’শ থেকে পাঁচ’শ জন ব্যক্তিকে করোনা টিকা আওতায় আনা হয়েছে।

বতর্মানে সদর হাসপাতালে তিন হাজার সাত’শ করোনা ভ্যাকসিন টিকা বরাদ্দ রয়েছে। এই পযর্ন্ত প্রথম ডোজ ত্রিশ হাজার ও দ্বিতীয় ডোজ আঠার হাজার ব্যক্তিকে টিকা প্রদান করা হচ্ছে।

সদর হাসপাতালে করোনার টিকা নিতে আসা ৫নং ওয়ার্ড বাসিন্দা ঙোয়েনু (৩৮) মারমা বলেন, সেই সকাল সাড়ে ৭টায় এসে করোনা টিকা সংগ্রহের কার্ড কাউন্টারে জমা দিয়েছে।

অপেক্ষা করতে করতে এখন ১০টা বাজলো। কবে যে টিকা নিতে পারবো তার কোন হদিস পাচ্ছি না। এত মানুষ হবে চিন্তা করিনি।

শহরের উজানি পাড়ার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী মহিলা উহ্নাচিং মারমা বলেন, করোনা টিকা নিতে এসে হাসপাতালে টিকা গ্রহণকারীদের উপচে পড়া ভীড় দেখে হতাশ। তিনি নিজেকে টিকা গ্রহণ করতে অপরাগত প্রকাশ করেন।

করোনা ভ্যকসিন নিতে আসা বান্দরবান সদর ২নং কুহালং ইউনিয়নে জুহুর আক্তার (৩৪) বলেন, এর আগে করোনা টিকা নিতে প্রয়োজন বোধ মনে করেনি। প্রায় ঘন্টায় খানিক কার্ড সংগ্রহ করে টিকা নিতে লাইনের দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় আছি।

এদিকে বান্দরবান সদর হাসপাতালে করোনা ভ্যাকসিনেশন এর স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যরা।

সেচ্ছাসেবকরা ভ্যাকসিন টিকা গ্রহণ করতে আসা মানুষদের সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি করোনা উপেক্ষা করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে করোনা টিকা নিতে আসা জনসমাগম ছিল হাতের নাগালের বাইরে এমনটিই বলছেন তাঁরা।

সদর হাসপাতালের ন্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্বরত রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি বান্দরবান ইউনিটের আরমান উল্লাহ রাফি বলেন, আমরা সাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে সচেতন করার চেষ্টা করছি।তবুও জনসাধারণ স্বাস্থবিধি মানার কোন প্রক্রিয়া দেখছিনা।

তিনি আরো বলেন, সকাল থেকে আমরা করোনা টিকা নিতে আসা সর্বসাধারণকে মাস্ক পড়তে বারবার বলা হলেও অনেকে তা মানছেনা।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সারিবদ্ধভাবে লাইনের দাঁড়াতে নিদের্শনা দিলেও তারা কোন মতেই পালন করছেনা।

এর ফলে করোনা সংক্রমণ আরো দ্রুত বাড়বে বলে আশংকা করছি। তবে মাস্কবিহীনদের টিকা দেয়া হবেনা বলেও মাইকে প্রচার করে সাবধান করা হচ্ছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালে আবাসিক অফিসার প্রিলোচন চাকমা জানান, জেলায় করোনা বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ করোনা ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহ বেড়েছে।

তবে টিকা দিতে আসা মানুষ ছিলো বেশ চোখে পড়া মতো। ফলে করোনা বুথ ২টির পরিবর্তে আরো ২টি বাড়িয়ে ৪টি করা হয়েছে।

কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মী কমতি হওয়াই সামাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে রেডক্রিসেন্ড ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু এই ব্যাপারে সকল তথ্য সিভিল সার্জন মহোদয় দিতে পারবেন বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে বান্দরবান সিভিল সার্জন ডাঃ অংশৈপ্রু মারমা বলেন,সাধারণ মানুষ কোভিড পরিক্ষা ও টিকা নেওয়ার জন্য আগের চেয়ে তূলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।তবে স্বাস্থ্য বিভাগ হতে সামাজিক দুরত্ব ও মাস্ক পরিধান করা জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চলতি মাসে ৭ আগষ্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনা টীকা দান কার্যক্রম শুরু হবে বলেও জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours