দীর্ঘ তিন বছরেরও বেশি সময় পর বিশ্বব্যাপী কোভিড জরুরি অবস্থা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। তবুও প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে এখনও প্রতি চার মিনিটে মৃত্যু হচ্ছে কমপক্ষে একজনের।
সংক্রামক এই ভাইরাসকে ঠিক কীভাবে মোকাবিলা করা যায় সে সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর এখনও পুরোপুরি পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ মানুষের জন্য করোনাভাইরাসের হুমকি কমলেও বিশ্বজুড়ে জনসংখ্যার একটি অংশের জন্য এটি এখনও অত্যন্ত বিপজ্জনক হিসেবে রয়েছে গেছে। আর তাই সংক্রামক এই ভাইরাসকে কীভাবে নিয়ন্ত্রণ বা মোকাবিলা করা যায় তা বর্তমানে বড় ধরনের প্রশ্ন হিসেবে উঠে এসেছে।
গত বছর হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের পর কোভিডে আক্রান্ত হয়েই যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। অর্থাৎ মৃত্যুর কারণ হিসেবে গত বছর উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে কোভিড ছিল তৃতীয় অবস্থানে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে- বর্তমানে বিশ্বে প্রতি চার মিনিটে একজন করে কোভিড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু ঘটছে। মৃতদের মধ্যে সবেচেয়ে বেশি আছেন বয়স্করা। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর তৈরি হয়েছে নতুন করে আতঙ্ক।
অবশ্য করোনা মহামারি পেছনে ফেলে বিশ্বজুড়ে বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। চলতি মাসের শুরুতে করোনাভাইরাস মহামারি আর ‘বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা’ নয় বলে ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে বিশ্বের প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।
করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল চীনে। এরপর অত্যন্ত দ্রুতগতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বে করোনাভাইরাসের আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট উদ্ভূত হওয়ার হুমকি এখনও রয়ে গেছে যা নতুন করে এই রোগ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়াতে পারে এবং নতুন করে আরও রোগজীবাণু উদ্ভূত হওয়ার মারাত্মক হুমকি এখনও রয়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোভিড এখনও অনেক লোককে সংক্রমিত করছে এবং মৃত্যু ঘটাচ্ছে। আমাদের কাছে এটি কমিয়ে আনার উপায়ও রয়েছে।’
এ ব্যাপারে চীনের উহানের ল্যাব প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন তারা। উহানের ল্যাব থেকে কোভিড ভাইরাস ছড়িয়েছিল বলে দাবি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ ব্যাপারে চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাওয়া হলেও দেশটি তা দিতে অস্বীকার করে। এই ধরনের মানসিকতা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাধা হয়েছে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অবশ্য বিশ্বকে পুরোপুরি কোভিডমুক্ত করতে টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
+ There are no comments
Add yours