ন্যায্যমূল্য না পেয়ে চা বাগান কেটে ফেলছেন চাষিরা

Estimated read time 1 min read
Ad1

সমতল ভূমিতে চা শিল্পে বিপ্লব ঘটলেও কয়েক বছর ধরে চা চাষিদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, চা শিল্পকে ঘিরে এক ধরনের সিন্ডিকেট গড়ে ওঠায় বাগানের উৎপাদিত কাঁচা চা পাতার ন্যায্য দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

এমনকি চলতি মৌসুমে কারখানাগুলো যে দামে চা পাতা কিনছে তাতে উৎপাদন খরচও উঠছে না। ফলে বছরের শুরুতেই লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে দাবি চাষিদের। এমন অবস্থায় ক্ষোভে চা বাগান কেটে ফেলছেন অনেক চাষি।

শুরুর দিকে কেজিপ্রতি চা পাতার দাম পেতেন ৩০ থেকে ৪০ টাকা। কিন্তু বর্তমানে কারখানার মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে ১৮ টাকার উপরে দাম পাচ্ছেন না তারা। চলতি বছর মার্চ থেকে চা পাতা কিনছেন কারখানার মালিকরা।

মে থেকে জুলাই পর্যন্ত থাকে চায়ের ভরা মৌসুম। কিন্তু শুরুতেই কারখানার মালিকরা সিন্ডিকেট তৈরি করে দাম কমিয়ে চাষিদের কাছ থেকে ১৩ থেকে ১৫ টাকায় পাতা কিনছেন। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে কেটে নিচ্ছেন ৪০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত পাতা।

চা বোর্ডের পঞ্চগড় আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০০ সালে পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিকভাবে চা শিল্পের বিপ্লব ঘটে। গত দুই দশকে বদলে যায় তার চিত্রপট। এক সময়ের পতিত জমি হয়ে ওঠে সবুজ চা বাগান। সবুজ পাতায় জেগে ওঠে নতুন অর্থনীতি। চা উৎপাদনে সিলেটের পর দ্বিতীয় অঞ্চল হয়ে উঠে এ জেলা। প্রায় ১০ হাজার একর জমিতে গড়ে উঠেছে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে সাত হাজার চা বাগান।

শুধু পঞ্চগড় থেকেই গত বছর এক কোটি ৫২ লাখ কেজি তৈরি চা উৎপাদন হয়েছে। জেলার লক্ষাধিক মানুষ জড়িয়ে পড়েছেন চা শিল্পে। বেকারদের একটি বড় অংশ চাকরির আশা ছেড়ে দিয়ে চা চাষে বিনিয়োগ করেছেন। বর্তমানে জেলায় ২৩টি চা প্রক্রিয়াজাত কারখানা চালু রয়েছে।

তবে সিন্ডিকেটের কথা অস্বীকার করে কারখানা মালিকরা জানান, ভালো মানের চায়ের পূর্বশর্ত হলো দুটি পাতা একটি কুঁড়ি হিসেবে বাগান থেকে চা তুলতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে জেলা চা পাতা মূল্য নির্ধারণ কমিটি কর্তৃক ৪ পাতা পর্যন্ত অনুমোদন করে।

কিন্তু চা চাষিরা আট থেকে ১০ পাতা পর্যন্ত চা তুলে কারখানায় নিয়ে আসেন। তাই বাধ্য হয়ে নির্ধারিত ওজনের তুলনায় কিছু কর্তন করতে হয়। এছাড়া মান নিয়ন্ত্রণ না করায় চট্টগ্রামের অকশন মার্কেটে পঞ্চগড়ের চা তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. জহুরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে কাঁচা চা পাতার কম দাম ও কর্তন করে দাম দেওয়ার অভিযোগ এসেছে। শিগগিরই চা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে বসে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক https://khoborbangla24.net

বিশ্বজুড়ে দেশের খবর

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours