আফিফ আইমান: বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তির৷ প্রযুক্তিগত ভাবে কোনো জাতি যতটুকু উন্নত, সেই জাতির জনসাধারণের জীবন যাত্রার মান ঠিক ততোধিক উন্নত। প্রযুক্তিনির্ভর আজকের বিশ্বে, প্রায় সকলের হাতেই রয়েছে মুঠোফোন। এছাড়াও, দৈনন্দিন জীবনের যেকোনো ধরণের কাজকে সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে প্রায় সকলের কাছেই রয়েছে নামাবিধ ইলেকট্রনিক ডিভাইস।
কিন্তু, হাতের মুুঠোয় প্রযুক্তিকে আঁকড়ে ধরে রাখলেই, কারো ব্যক্তিগত কিংবা কোনো জাতির সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভবপর হয়ে উঠে না৷ প্রয়োজন হয়, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের। এর জন্যে, বরাবর ই প্রযুক্তিগত ভাবে নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হয়। দেশ ও জাতির মানবসম্পদে পরিণত করতে হয় নিজেকে। আধুনিক বিশ্বের সাইবার জগতে বেশ বড় রকমের পরিবর্তন এনে দিয়েছে কনটেন্ট রাইটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এর মূল ভিত্তিই হলো কনটেন্ট রাইটিং।
বর্তমান সময়ে পৃথিবীর অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষের কাছে ‘কনটেন্ট রাইটিং’ প্রাত্যহিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কনটেন্ট রাইটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টরে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে এসেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রী অনুষদের সাবেক শিক্ষার্থী রাফাত হাসান। ক্ষুরধার মস্তিষ্কের এই মানুষটি কনটেন্ট রাইটিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে অনন্যসাধারণ প্রতিভা হিসেবে পরিচিত। মেধাবী এবং পরিশ্রমী মানুষটির মার্কেটিং সেক্টরে রয়েছে অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি৷ অতি সাধারণ বিষয়বস্তুকেে নিজের লেখনীর মাধ্যমে ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে নিয়ে গেছেন রাফাত।
ভিন্নধর্মী এই দৃষ্টিভঙ্গিই মার্কেটিং জগতে রাফাতের অনন্য মগজাস্ত্র। রাফাতের জন্ম ও বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে৷ বিদ্যালয় জীবন অতিবাহিত করেছেন চট্টগ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল এবং কলেজে। স্কুল পর্যায়ে তৎকালীন পিএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে (ট্যালেন্টপুল) বৃত্তি পেয়েছেন রাফাত। পরবর্তীতে বাবার চাকরিজীবনে অবসরপ্রাপ্তি হলে, সপরিবারে ঢাকায় ফিরে আসেন রাফাত। বিদ্যালয়ের ৯ম – ১০ম শ্রেণী পড়েছেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলে। পরবর্তীতে কৃত্বিতের সহিত উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন ঢাকার নৌবাহিনী কলেজ থেকে।
উল্লেখ্য, সেবছর ঢাকা নেভি কলেজ হতে মাত্র তিন জন শিক্ষার্থীর ই সকল বিষয়ে এ (+) এসেছিলো, সেই তিন জন শিক্ষার্থীর মধ্যে রাফাতও একজন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রী অনুষদে ভর্তি হন রাফাত। সংস্কৃতিমনা রাফাত বাকৃবির বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনে যুক্ত হন রাফাত৷
এরমধ্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব৷ এছাড়াও, প্রতিবছর অনুষদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোতে মঞ্চাভিনয় করে এসেছেন রাফাত। বিভিন্ন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানামুখী সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার তৈরি স্ক্রিপ্ট এই নাটক মঞ্চস্থ করা হয়েছে। ক্ষুরধার লেখনীগুণ সম্পন্ন রাফাত তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত সময়ে বাকৃবির শিক্ষার্থী সামীর আহমেদ সোহান এবং আবুল বাশার বিপুল এর সাথে টিম ‘বাউএলসি অরবিট’ গঠন করেন এবং ল্যাঙ্গুয়েজ লিগ ২০১৯ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করে প্রায় ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরাস্ত করে স্ক্রিপ্ট রাইটিং এ প্রথম স্থান অর্জন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে রাফাত ‘ব্লু প্রিন্ট অফ কনটেন্ট ক্রিয়েশন’ কোর্সের একজন প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি দেশের তরুণ, উদ্যমী গ্রুপ থেকে দক্ষ কন্টেন্ট নির্মাতাদের বের করে আনতে কাজ করছেন।
এছাড়াও তিনি, স্মার্টিফায়ার একাডেমিতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অ্যাসোসিয়েট হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনের অনন্য প্ল্যাটফর্ম জাতীয় সংবাদপত্র অলিম্পিয়াডে ‘কনটেন্ট লিখনী’র প্রধান হিসেবে নিযুক্ত থেকেছেন। এছাড়াও, তিনি ‘সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট’ সৃজনী দলের সাথে ওতপ্রতভাবে সংযুক্ত থেকেছেন৷
বর্তমানে, রাফাত হাসান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস এ এমবিএ কোর্সে (মার্কেটিং মেজর) ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও, স্নাতক সম্পন্ন করবার পরই রাফাত ‘নেক্সট ভেনচার্স’ নামক একটি বুটস্ট্র্যাপ কোম্পানিতে কমিউনিটি ম্যানেজার হিসেবে যোগদান করেন, যেটি কিনা বাংলাদেশের ফিনটেক ইউনিকর্ন হিসেবে খ্যাতি অর্জনের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছে। কোম্পানিতে জয়েনিং এর মাত্র ১০ মাসের মধ্যেই অভূতপূর্ব সাফল্যের মুখ দেখেন রাফাত৷ নেক্সট ভেনচারস কর্তৃক প্রতিমাস ব্যাপী ‘কি পারফরম্যান্স ইনডিকেটর’ এ বরাবর সেরা প থেকেছেন রাফাত।
এছাড়াও প্রতিবছর উদযাপিত নেক্সট স্টেলার এ্যাওয়ার্ড এ এবছর ৩ টি ক্যাটেগরিতে নোমিনেশন পেয়েছিলেন রাফাত এবং ‘নেক্সট ইনফ্লুয়েন্সার’ সম্মাননায় ভূষিত করা হয় রাফাতকে। বর্তমানে নেক্সট ভেনচারস এর নতুন উইং ‘পার্টনার ম্যানেজমেন্ট’ এ দ্বায়িত্বরত রয়েছেন রাফাত । রাফাত হাসান বাংলাদেশের কন্টেন্ট রাইটিং সেক্টরে অসামান্য কিছু এনে দেবার স্বপ্ন দেখেন। তার অসামান্য প্রতিভা তাকে তার স্বপ্নের মতোই উপযুক্ত করে তুলেছে। আগামী দিনে এ খাতের গুরুত্ব অনুভব করেন তিনি।
কনটেন্ট লিখনী এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ এবং তার নিজস্ব পরিকল্পনা জিজ্ঞেস করা হলে রাফাত বলেন, ‘ কনটেন্ট এমন একটি বস্তু, যেটা মানুষ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন উপায়ে গ্রহণ এবং ব্যবহার করে থাকে। ‘কনটেন্ট’ আগামী পৃথিবীর ভবিষ্যৎ।
+ There are no comments
Add yours